
ঋণখেলাপির তালিকায় নাম স্থগিত, মান্নার নির্বাচনে অংশ নিতে আইনগত বাধা কাটলঋণখেলাপি তালিকায় (ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো বা সিআইবি) নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার নাম অন্তর্ভুক্তের কার্যক্রম আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
শুনানি নিয়ে চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক গতকাল সোমবার এ আদেশ দেন। ফলে মান্নার আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে আইনত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব।
আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের অংশীদার মান্না। এই কোল্ড স্টোরেজের নামে ইসলামী ব্যাংকের বগুড়া শাখা থেকে নেওয়া ঋণ ঘিরে সিআইবি প্রতিবেদনে নিজের নাম অন্তর্ভুক্তির কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে মান্না হাইকোর্টে রিট করেন। কারণ, ঋণখেলাপি হলে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ থাকে না। শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ২৪ ডিসেম্বর রিটটি খারিজ করে আদেশ দেন। হাইকোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধে সিআইবি প্রতিবেদনে নাম অন্তর্ভুক্তির কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে গত রোববার আবেদন করেন মান্না। আবেদনের ওপর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানি হয়।
আদালতে মান্নার পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী আহসানুল করিম ও সৈয়দ মামুন মাহবুব এবং আইনজীবী জ্যোর্তিময় বড়ুয়া শুনানিতে ছিলেন। ইসলামী ব্যাংকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী এম আবদুল কাইয়ূম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. জহিরুল ইসলাম সুমন।
আদেশের পর মান্নার আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব বলেন, ঋণখেলাপি তালিকায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতির (মান্না) নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এই নাম অন্তর্ভুক্তির কার্যক্রম আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। অর্থাৎ ঋণখেলাপি হিসেবে মান্নার নাম বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবিতে থাকবে না। সুতরাং মান্নার নির্বাচনে প্রার্থী হতে ও অংশ নিতে আইনত কোনো বাধা নেই।আবেদনকারীর আইনজীবীর ভাষ্য, আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের ৫০ শতাংশ শেয়ার মান্নার। এই কোল্ড স্টোরেজের নামে ইসলামী ব্যাংকের বগুড়া শাখা থেকে ঋণ নেওয়া হয়েছিল। ইসলামী ব্যাংকের পাওনার পরিমাণ ৩৬ কোটি টাকা। মান্নার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ পুনঃতফসিল করতে ইসলামী ব্যাংককে নির্দেশনা দেয়। ঋণ পুনঃতফসিল করে ইসলামী ব্যাংক। ঋণ পুনঃতফসিল সত্ত্বেও তাঁর নাম সিআইবিতে রয়ে গেছে, যা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণসহায়তা কার্যক্রমণ্ডসংক্রান্ত বিধি অনুসারে ২ শতাংশ হারে জমা দিতে হয়। ২ শতাংশ হারে ৭২ লাখ টাকা হয়। মান্না ইতিমধ্যে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা জমা দিয়েছেন। বাকি টাকাও তিনি দিতে চান, কয়েক কিস্তিতে।
ডাকসুর দুইবারের ভিপি, আওয়ামী লীগের একসময়ের নেতা মান্না বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনে নির্বাচন করতে চান। এর আগে একাধিকবার তিনি প্রার্থী হলেও কখনো তাঁর সংসদে যাওয়া হয়নি। এবার বিএনপির সমর্থন পেয়েছেন তিনি। মিত্রদলের নেতা হিসেবে বগুড়া-২ আসনটি তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ২৪ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলনে জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।