বাংলাদেশে কিডনি রোগীদের চিকিৎসা ব্যয়বহুল ও সীমিত পরিসরে থাকায় প্রতিবছর অসংখ্য রোগী উন্নত চিকিৎসার নিতে বিদেশে যান। বিশেষত, কিডনি প্রতিস্থাপন ও ডায়ালাইসিস সুবিধা পর্যাপ্ত না থাকায় রোগীরা ভারত, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছেন। এই প্রবণতা রোধ করতে ১১টি প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ রেনাল অ্যাসোসিয়েশন। গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত বিশ্ব কিডনি দিবস ২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ সব প্রস্তাব জানায় সংগঠনটি। প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে- কিডনি রোগের ভয়াবহ পরিমাণ জনসাধারণের কাছে প্রচার করতে হবে, প্রাথমিক কিডনি রোগ শনাক্তকরণকে ইউনিয়ন পর্যায়ে পৌঁছাতে হবে, দেশের প্রতিটি জেলা সদর হাসপাতালে ডায়ালাইসিস ব্যবস্থা করতে হবে; সিএপিডি ফ্লুইডের দাম জনসাধারণের কয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে, লাইভ রিলেটেড কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের ক্ষেত্রে কিডনি ডোনারের পরিমাণ বাড়াতে হবে, ‘ক্যাডাভেরিক কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের ক্ষেত্রে রেনাল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম চালু করতে হবে, চিকিৎসকদের যথাসময়ে পদোন্নতির ব্যবস্থা করতে হবে, কিডনি বিশেষজ্ঞ তৈরির জন্য এমডি কোর্স বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিস্তৃত করতে হবে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের প্রয়োজন অনুযায়ী সুষম ভাবে বণ্টন করতে হবে এবং কিডনি রোগীদের জন্য আরও উন্নত সুযোগ-সুবিধাসহ কিডনি রোগের চিকিৎসা দেশে করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ রেনাল অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব ডা. মোহাম্মদ ফরহাদ হাসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার রোগীর কিডনি বিকল হয়। কিন্তু চিকিৎসা পায় মাত্র ১৫-২০ শতাংশ রোগী। ফলে বাকি ৮০ শতাংশ মানুষ চিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছেন। দেশে কিডনি চিকিৎসার পরিধি বাড়ানোর পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। এই ১১ দফা বাস্তবায়ন করা গেলে কিডনি রোগীদের বিদেশমুখিতা কমবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএসএমএমইউ-এর নেফ্রোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. নজরুল ইসলাম, কেএএমএস- সভাপতি প্রফেসর এমএ সামাদ, পপুলার মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক মোহিবুর রহমান প্রমুখ।