ঢাকা রোববার, ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ঢাকার বাতাসের গুণগতমান যাচাই

২৫ স্থানে বসছে আধুনিক যন্ত্র

তাপমাত্রা ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে গাছই ভরসা : ডিএনসিসি প্রশাসক
২৫ স্থানে বসছে আধুনিক যন্ত্র

ব্লুমবার্গের সহায়তায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতাধীন এলাকার ২৫টি পাবলিক প্লেসে বাতাসের গুণগতমান যাচাইয়ের জন্য অত্যাধুনিক যন্ত্র স্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। গতকাল রাজধানীর গুলশানে ডিএনসিসি নগরভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ বিষয়টি জানান। ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, উদ্ভিদবিদদের সহায়তায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় ও খালগুলোর দুইপাড়ে গাছ লাগানো হবে।

ডিএনসিসির একটা ইনোভেশন ল্যাব আছে সেখানে বেশকিছু গবেষণালব্ধ তথ্য রয়েছে, প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলো যদি তাদের গবেষণালব্ধ তথ্যের আদান-প্রদান করে তাহলে সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হবে। সবাই মিলে একটি বাসযোগ্য শহর বিনির্মাণ করতে সহজতর হবে বলে উল্লেখ করেন ডিএনসিসি প্রশাসক। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, এই শহরে যে পরিমাণ পাবলিক প্লেস থাকার কথা ছিল তার তিনভাগের একভাগও নেই। শহরের জলাশয়েরও একই অবস্থা, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। আমাদের পাবলিক প্লেসগুলোতে ছায়ার ব্যবস্থা কম। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে এরইমধ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশনা দিয়েছি।

তাপমাত্রা ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে গাছই ভরসা বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। তিনি বলেন, আমরা শহর বলতেই বুঝি কম গাছ বেশি দালানকোঠা। অন্যদিকে, গ্রাম বলতে বুঝি বেশি গাছ কম বাড়িঘর। আমরা নিজেরাই এই ডাইভারসিফিকেশন তৈরি করেছি। ঢাকা শহরের সবুজায়ন ক্রমান্বয়ে কমে আসছে। আমাদের শহরগুলোকে পুনরায় বির্নিমাণ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, পরিকল্পনা করে গাছ রোপণের মাধ্যমে ঢাকা শহরের তাপমাত্রা কমিয়ে আনতে হবে। ঢাকায় বায়ুদূষণ ও তাপমাত্রার তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। গতকাল নগর ভবনের অডিটোরিয়ামে এক গবেষণার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিএনসিসি প্রশাসক এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করে ডিএনসিসি, বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস), কমিউনিটি টাউন ফেডারেশন এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ।

গবেষণা বিষয়ে প্রেজেন্টেশনে বলা হয়, গবেষণাটি ১২ মাসব্যাপী পরিচালিত হবে। ঢাকা উত্তরের ৫টি স্থানে স্যাটেলাইট ইমেজ ও ডিজিটাল যন্ত্র ব্যবহার করে গাছপালার প্রভাব মূল্যায়ন করা হবে। এতে তরুণ ও বস্তি এলাকার মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে। অনুষ্ঠানে ক্যাপস চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জমান বলেন, গাছ শুধু অক্সিজেন দেয় না, বরং তাপমাত্রা ও দূষণ নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করে। বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণার মাধ্যমে কোন গাছ কোথায় রোপণ করা বেশি উপকারী, সেটি জানা সম্ভব। ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের ন্যাশনাল ডিরেক্টর সুরেশ বাটলেট বলেন, এই গবেষণা সময়োপযোগী। শিশুদের জন্য দূষণমুক্ত ভবিষ্যৎ গড়তে এর ফলাফল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান বলেন, যেসব গাছ হারিয়ে গেছে সেগুলোর অস্তিত্ব বিলুপ্ত হওয়ার পেছনে দূষণ নাকি কর্তনতা গবেষণার মাধ্যমে নির্ধারণ করতে হবে। গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী শহরে কোন গাছ লাগানো প্রয়োজন তা জানাতে হবে। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক ইঞ্জি. মো. নাসির আহমেদ পাটোয়ারী প্রমুখ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত