পরিবেশ আদালতে নাগরিকদের মামলা দায়েরের সুযোগ ও পরিবেশ সংরক্ষণ আইন সংশোধনের দাবি জানিয়েছে একাধিক সংগঠন ও বিশিষ্টজনরা। তারা বলছেন, ১৭ কোটি মানুষের দেশে মাত্র দুটি পরিবেশ আদালত এবং সেই আদালতে নাগরিকদের সরাসরি মামলা করার সুযোগ না থাকায় পরিবেশ সুরক্ষা কার্যকরভাবে নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।
গতকাল রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), সেন্টার ফর ল অ্যান্ড পলিসি অ্যাফেয়ার্স, পাবলিক হেলথ লইয়ার্স নেটওয়ার্ক, বারসিক, ক্যাপস, ওপেন সিসেমি ফাউন্ডেশন ও আর্থ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের যৌথ আয়োজেন অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ‘সেন্টার ফর ল অ্যান্ড পলিসি অ্যাফেয়ার্স’-এর সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম। সঞ্চালনায় ছিলেন পবা’র সম্পাদক মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ সুমন।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, নাগরিকদের সরাসরি মামলা করার সুযোগ না থাকলে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের কার্যকারিতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। এজন্য আইন সংশোধন করে পরিবেশ আদালতে সরাসরি মামলা দায়েরের বিধান রাখতে হবে। তারা আরও বলেন, পরিবেশ অধিদফতরের কর্মকর্তাদের ঘটনাস্থলেই জরিমানা আদায়ের ক্ষমতা দিতে হবে এবং পরিবেশ সংরক্ষণে ‘পরিবেশ ফোর্স’ গঠন করতে হবে। পরিবেশবিদ আবু নাসের খান বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণ ও আদালত আইন সংশোধন আজ সময়ের দাবি। মন্ত্রণালয় ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত পরিবেশ অধিদফতর গঠন করাও জরুরি। পরিবেশবিদ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, পরিবেশ দূষণের কারণে মানুষ সবচেয়ে বেশি রোগাক্রান্ত হচ্ছে। অথচ আদালতে সরাসরি মামলা করতে না পারা নাগরিক অধিকার হরণের সামিল।বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স-এর সভাপতি অধ্যাপক ড. আদিল মোহাম্মদ খান বলেন, আইন প্রণয়নের সময় জনগণের অংশগ্রহণ না থাকায় আইনে নাগরিক স্বার্থ প্রতিফলিত হয় না।
সেমিনারে পরিবেশ আদালতের বিচারকদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, পরিবেশ আইনভঙ্গকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান, পরিবেশ বিষয়ক এক্সপার্ট নিয়োগের আইনি বাধ্যবাধকতা, পরিবেশ অধিদফতরকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থায় রূপান্তরের দাবি, পরিবেশ দূষণের আশঙ্কায় প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা প্রদান, লাইসেন্স বাতিল ও ইউটিলিটি সার্ভিস বন্ধের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা, অভিযোগের নিষ্পত্তি বাধ্যতামূলক করা, আনসার সদস্যদের নিয়ে পরিবেশ ফোর্স ইউনিট গঠন, ক্ষতিপূরণ ও জবাবদিহিতার আওতায় সরকারি প্রকল্পসহ বেশকিছু সুপারিশ করা হয়।