ঢাকা রোববার, ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

‘চিলে কান’ গল্পের মতো করিডোর অপপ্রচার : প্রধান উপদেষ্টা

‘চিলে কান’ গল্পের মতো করিডোর অপপ্রচার : প্রধান উপদেষ্টা

বাংলাদেশ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের জন্য করিডোর খুলে দিয়েছে—এমন একটি অপপ্রচারের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

শুক্রবার (৬ জুন) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, “আমরা লক্ষ্য করেছি, রাখাইনের জন্য বাংলাদেশ করিডোর দিয়ে দিয়েছে—এমন বিভ্রান্তিকর প্রচার চালানো হচ্ছে। আমি সুস্পষ্টভাবে জানাচ্ছি, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। এটা চিলে কান নিয়ে যাওয়ার গল্প। যারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে মিথ্যা কাহিনি তৈরি করে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে, এটি তাদেরই অপচেষ্টা। দেশের মানুষকে এ ধরনের অপপ্রচারের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।”

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বক্তব্যে ড. ইউনূস জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে, যার মধ্যে প্রায় এক লাখ এসেছেন ২০২৩ সালের শুরু থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, যখন রাখাইন রাজ্যে তীব্র যুদ্ধাবস্থা চলছিল। তিনি বলেন, “সংঘাত ও মানবিক বিপর্যয়ের কারণে এখনো অনেকেই বাংলাদেশে আসার চেষ্টা করছেন। এই অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে এবং অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে আমরা জোরালো উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।”

প্রধান উপদেষ্টা জানান, দায়িত্ব গ্রহণের সময় রোহিঙ্গা ইস্যুটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছিল। কিন্তু বর্তমান সরকার বিষয়টিকে আবারও বৈশ্বিক আলোচনার কেন্দ্রে আনতে সক্ষম হয়েছে। তার আহ্বানে গত বছর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে রোহিঙ্গাবিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সেই অনুযায়ী, আগামী সেপ্টেম্বর মাসে নিউইয়র্কে উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি বলেন, “আমরা আন্তর্জাতিক জনমত গঠন করতে সক্ষম হয়েছি। গত মার্চে বাংলাদেশ সফরকালে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ স্পষ্টভাবে বলেছেন—রোহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র সমাধান হলো তাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন।”

প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার অগ্রগতি প্রসঙ্গে ড. ইউনূস জানান, “গত এপ্রিল মাসে ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের সাইডলাইনে মিয়ানমার সরকার প্রথমবারের মতো ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসনযোগ্য বলে ঘোষণা করেছে। এটি গুরুত্বপূর্ণ এক পদক্ষেপ।”

তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন এবং সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মিয়ানমার সরকার ও সেখানকার বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে নিয়মিত আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সফরে গিয়েও সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে এই ইস্যুতে আলোচনা করা হয়েছে এবং তারা বাংলাদেশের আহ্বানে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে।

ভাষণের এক পর্যায়ে তিনি জানান, রাখাইনে মানবিক সহায়তার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিব একটি ত্রাণ চ্যানেলের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সহায়ক হতে পারে। তবে সেটি এখনো প্রস্তাবনার পর্যায়ে রয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা,করিডোর
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত