ঢাকা শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

তরুণদের নেশায় প্রলুব্ধ করার জন্য তামাক কোম্পানির শাস্তি দাবি

তরুণদের নেশায় প্রলুব্ধ করার জন্য তামাক কোম্পানির শাস্তি দাবি

শিশু-কিশোর, তরুণদের ক্ষতিকর তামাকের নেশা থেকে বিরত রাখতে তামাক কোম্পানির কূটকৌশল প্রতিহত এবং আইন লঙ্ঘন করে তামাক পণ্যের প্রচার-প্রচারণা ও প্রলুব্ধ করার জন্য তামাক কোম্পানিগুলোকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। তামাক কোম্পানির নিত্য নতুন অপকৌশল প্রতিরোধ করতে হবে। এটা নিশ্চিত করা গেলে দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যবান প্রজন্ম নিশ্চত হবে এবং স্বাস্থ্য খাতে তামাকজনিত রোগ হ্রাস পাবে, অকালমৃত্যু ও সামগ্রীক ক্ষয়-ক্ষতির বোঝা কমে আসবে।

গতকাল শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘মানস’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা অভিমত ব্যক্ত করেন। সংবাদ সম্মেলনে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন ও সভাপতিত্ব করেন ‘মানস’ এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সোশাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান, সরকারের অবসরপ্রাপ্ত সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোরে বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ। অতিথি ছিলেন মানস এর সাধারণ সম্পাদক কণ্ঠশিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদ, ভাইটাল স্ট্রাটেজিস এর টেকনিক্যাল এডভাইজার আমিনুল ইসলাম সুজন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মানস এর সাংগঠনিক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান তালুকদার ও সঞ্চালনা করেন তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প সমন্বয়কারী উম্মে জান্নাত। মূল প্রবন্ধে মানস সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী বলেন, ধূমপায়ী ও তামাক সেবনকারীদের ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্ট্রোক, ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি রোগসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগ হয় এবং বর্তমানে এসব রোগে ৬৭% মানুষ মারা যাচ্ছে। বাংলাদেশে ক্যান্সারে নতুন করে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। তরুণ ধূমপায়ীদের ডায়াবেটিসে আক্রান্তের ঝুঁকি অনেক বেশি। অথচ, তরুণদের তামাকে আকৃষ্ট করতে কোম্পাানি আকর্ষণীয় রং, ফ্লেভার, আকর্ষণীয় ডিজাইন ব্যবহার করছে। বিক্রয়কেন্দ্রে, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এবং চলচ্চিত্র, নাটক, ওয়েবসিরিজে নায়ক ও প্রধান চরিত্র দ্বারা ধূমপান, মাদকদ্রব্য সেবনের দৃশ্য এমনকি আইন পরিপন্থি বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এছাড়া নতুন আপদ ‘ই-সিগারেট’ বাজারজাত করতে অপকৌশল চালিয়ে আসছে। তরুণরা বিপথে গেলে জাতিগতভাবে তা হবে আমাদের জন্য দুরভাগ্যজনক ব্যাপার। সুতরাং তরুণদের সুরক্ষায় তামাক কোম্পানিগুলোর কোম্পানির প্রচার-প্রচারণা ও প্রলুব্ধকরণ কর্মসূচি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা অপরিহার্য। ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, তামাকের রাজস্ব নির্ভরতা কমাতের সরকার কাজ করছে। তবে প্রকৃত সত্য হলো, তামাক কোম্পানি যে পরিমাণ তামাকজাত পণ্য উৎপাদন করে সে অনুসারে কর দেয় না। অর্থাৎ বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলো কৌশলে সরকারকে কর ফাঁকি দেয়। তামাকের কর অর্জন যা হয় তার চাইতে চিকিৎসায় ব্যয় বেশি। মূলত, এটা খাল কেটে কুমির আনার শামিল! আমাদের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠির মধ্যে তামাকজনিত রোগের বোঝা বাড়ুক তা আমরা কেউ চাই না। সুতরাং, তামাক কোম্পানিতে সরকারের প্রত্যাহার করে আমাদের স্ব বিরোধী কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ জরুরি।

আমিনুল ইসলাম সুজন বলেন, বিশ্বে ৮৭ লক্ষাধিক মানুষ মারা যায়। দেশে বছরে ১ লক্ষ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ তামাকজনিক রোগে মারা যায়। তামাকের ক্ষয়-ক্ষতি যখন থেকে মানুষ বুঝতে পারছে তখন থেকেই তামাক কোম্পানিগুলো তাদের কূটকৌশল শুরু করেছে। বিড়ি-সিগারেটে ফিল্টার সংযুক্ত করে এই প্রতারণার শুরু হয়। এখন কম ক্ষতিকর উপস্থাপন করে ই-সিগারেট বাজারজাত করতে চাইছে। এলক্ষ্যে বিভিন্ন ফ্লেভার, রং, ডিজাইন ব্যবহার করে তরুণ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করছে। এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত