
ইসলামের দীর্ঘ ইতিহাসে বিশ্বে কমবেশি শরীয়া আইন বলবৎ ছিল। কিন্তু ইংরেজরা উপমহাদেশে আমাদের সমাজ ব্যবস্থা ধ্বংস করার জন্য একদিকে শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনে, অন্যদিকে শরীয়া আইনে বিচার ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেয়। ইংরেজরা প্যানেল ল’ দিয়ে আমাদেরকে ২০০ বছর গোলাম বানিয়ে রেখেছিল। গত শনিবার বিকালে বায়তুশ শরফ ইসলামী গবেষণা কেন্দ্রের উদ্যোগে রবিউল আউয়াল উদযাপন উপলক্ষে ‘প্রচলিত বিচার ব্যবস্থায় শরীয়া আইনের প্রয়োগ-পদ্ধতি’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির ভাষণে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. নাকিব নসরুল্লাহ উপরোক্ত অভিমত ব্যক্ত করেন।
বায়তুশ শরফ আনজুমনে ইত্তেহাদের সভাপতি রাহবারে বায়তুশ শরফ আল্লামা শায়খ মুহাম্মদ আবদুল হাই নদভীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুপ্রিম কোর্র্টের সিনিয়র আইনজীবি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ রেজাউল ইসলাম। ইসলামী গবেষণা কেন্দ্র-ঢাকার পরিচালক ড. মুহাম্মদ ঈসা শাহেদীর সহঞ্চলনায় আলোচনায় অংশ নেন মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. এবিএম হাবিবুল ইসলাম, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি, গাজিপুর এর প্রফেসর ড. শামসুদ্দিন আহমদ, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক পিএলসির সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল মালেক মোল্লা এবং মসজিদ বায়তুশ শরফ ঢাকার খতিব মওলানা জাফর আহমদ।
প্রধান অতিথি তার ভাষণে আরও বলেন, জীবনের সর্বস্তরে শরীয়া আইন অনুসরণ না করে কেউ নিজেকে মুসলমান হিসেবে দাবি করতে পারবে না। ব্যক্তি জীবনে আমরা অনেকে শরীয়া আইন মেনে চলি : কিন্তু সামাজিক ও বিচার বিভাগীয় ক্ষেত্রে শরীয়া আইনের প্রয়োগ না থাকায় আমরা মুসলমান হিসেবে বিরাট পরীক্ষার সম্মুখীন। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, শরীয়া আইনের রূপরেখা সম্পর্কে ইসলামী রাজনীতিবিদদের ধারণাও পরিষ্কার নয়। সবচেয়ে লক্ষনীয় বিষয় হচ্ছে, শরীয়া আইনের রূপরেখা নিয়ে কোথাও কোনো গবেষণামূলক কার্যক্রম লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
শরীয়া আইনকে আইনগত রূপ দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সঙ্গে সংযোগ প্রতিষ্ঠা ও স্বীকৃতি আদায় করতে হবে এবং তার জন্য জনমত গঠন করার ছাড়া উপায় নেই। বক্তারা বলেন, প্রচলিত বিচার ব্যবস্থায় শরীয়া আইনের প্রয়োগ পদ্ধতি নিয়ে যে আলোচনার সূত্রপাত বায়তুশ শরফ গবেষণা কেন্দ্র থেকে শুরু হল, আমরা আশা করব, চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন মহল থেকে সে প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।