ঢাকা বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

পরিচ্ছন্ন পরিবেশ গড়ুন

আ স ম আল আমিন
পরিচ্ছন্ন পরিবেশ গড়ুন

পরিবেশ শব্দের বিস্তৃতি অনেক বিশাল। আমাদের পরিবেশ হলো- আকাশ-বাতাস, মাটি-পানি, গাছপালাসহ অনেক বিস্তৃত দিগন্ত। এগুলো মানুষের কল্যাণে মহান আল্লাহতায়ালা সৃষ্টি করেছেন। কারণ, মানুষ সামাজিক জীব। জীবন চলার পথে প্রতি কদমে প্রয়োজন সুন্দর পরিবেশের। সুন্দর পরিবেশ সুরক্ষার জন্য আমাদের অনেক করণীয় রয়েছে। যেমন-

নেয়ামতের শোকরিয়া আদায় : সুন্দর পৃথিবীতে আগমন আর সুন্দর অবয়ব নিয়ে আশরাফুল মাখলুকাতের উপাধি লাভ করা; সঙ্গে অপরূপ সুন্দর সৃষ্টির পরিবেশের সুবর্ণ সুযোগ লাভ করা নিঃসন্দেহে আল্লাহতায়ালার অশেষ নেয়ামত। এ নেয়ামতের শোকরিয়া আদায় বেশি বেশি করা চাই। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘যখন তোমাদের রব ঘোষণা দিলেন, যদি তোমরা শোকরিয়া আদায় কর, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের নেয়ামত বাড়িয়ে দেব। আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আজাব বড় কঠিন।’ (সুরা ইবরাহিম : ৭)। আর দুনিয়াতে আজাব-গজব যা আমাদের ওপর আসে, সব আমাদের হাতের কামাই। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘মানুষের কৃতকর্মের কারণে জলে-স্থলে বিপর্যয় প্রকাশ পায়। যার ফলে আল্লাহ তাদের কতককে কৃতকর্মের স্বাদ আস্বাদন করান; যেন তারা ফিরে আসে।’ (সুরা রুম : ৪১)।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা : একটি সুন্দর পরিবেশ গড়তে হলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার বিকল্প নেই। শুধু নিজে ব্যক্তিগত উদ্যোগে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকলে চলবে না, আশপাশের সবকিছুই পরিষ্কার রাখতে হবে। মদিনার নিকটবর্তী কোবা নামক এলাকার মানুষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জীবনযাপন করত। তাদের ভূয়সী প্রশংসা করে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘সেখানে এমন লোকেরা রয়েছে, যারা ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জন করতে পছন্দ করে। আর আল্লাহতায়ালা পবিত্রতা অর্জনকারীদের পছন্দ করেন।’ (সুরা তওবা : ১০৮)। পরিচ্ছন্নতা প্রসঙ্গে গুরুত্বারোপ করে রাসুল (সা.) বলেন, ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অর্ধেক।’ (মুসলিম : ২২৩)।

বৃক্ষরোপণে সর্বোচ্চ গুরুত্ব : হাটে-বাজারে, দেয়ালে, গাড়িতে একটি স্লোগান দেখা যায়- গাছ লাগান পরিবেশ বাঁচান। এতে বোঝা যায়, পরিবেশ সুন্দর ও সংরক্ষণে গাছ লাগানোর বিকল্প নেই। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তা দ্বারাই তিনি তোমাদের জন্য ফসল, জয়তুন, খেজুরগাছ, আঙ্গুর ও সর্বপ্রকার ফল উৎপাদন করেন। নিশ্চয় যারা চিন্তা করে, তাদের জন্য এসব বিষয়ে নিদর্শন রয়েছে।’ (সুরা নাহল : ১১)। রাসুল (সা.) বৃক্ষরোপণের গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘যদি কোনো মুসলমান একটি বৃক্ষরোপণ করে অথবা কোনো শস্য উৎপাদন করে এবং তা থেকে কোনো মানুষ কিংবা পাখি অথবা পশু ভক্ষণ করে, তবে তা উৎপাদনকারীর জন্য সদকাস্বরূপ বলে গণ্য হবে।’ (বোখারি : ২৩২০)।

বিশুদ্ধ পানি সংরক্ষণ জরুরি : পরিবেশের প্রায় সব উপাদান ও প্রক্রিয়া পানির ওপর নির্ভর করে। তাই পরিবেশ সংরক্ষণ করতে হলে পানির ভূমিকা অপরিহার্য। পানি না থাকলে গাছপালা জন্মাবে না, ফসল উৎপাদন হবে না। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তিনিই সেই সত্তা, যিনি আসমান থেকে পানি বর্ষণ করেন; যাতে রয়েছে তোমাদের জন্য পানীয় এবং তা থেকে হয় উদ্ভিত; যাতে তোমরা পশু চরাও।’ (সুরা নাহল : ১০)। আল্লাহতায়ালা আরও বলেন, ‘তোমরা যে পানি পান কর, সে সম্পর্কে চিন্তা করেছ কি? তোমরাই কি তা মেঘ থেকে বর্ষণ কর নাকি আমি করি!’ (সুরা ওয়াকিয়া : ৬৮-৬৯)। এ ছাড়া পরিবেশ সংরক্ষণে জুলুম ছেড়ে দিতে হবে। আল্লাহতায়ালার অবাধ্য হওয়া যাবে না। মানুষের প্রতি ইনসাফ করতে হবে। উত্তরাধিকার ঠিকমতো বণ্টন করতে হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত