
আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ও জিটুজি ভিত্তিতে দুবাই ও মিয়ানমার থেকে এক লাখ টন চাল আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরমধ্যে মিয়ানমার থেকে ৫০ হাজার টন আতপ চাল এবং দুবাই থেকে ৫০ হাজার টন নন বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানি করা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ৪৪৬ কোটি ২৩ লাখ ৮ হাজার ৫৭০ টাকা। গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এই চাল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কমিটির সভাপতি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বৈঠকে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে প্যাকেজ-০২ এর আওতায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন বাসমতি সিদ্ধচাল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। জানা গেছে, ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে ও জনস্বার্থে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে ৬ লাখ টন চাল আমদানির জন্য ‘অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’ অনুমোদন দেয়।
এর প্রেক্ষিতে দেশের সরকারি খাদ্য মজুত বৃদ্ধি করে সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখার স্বার্থে ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন বাসমতি সিদ্ধচাল আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হলে ৮টি দরপত্র জমা পড়ে। ৮টি প্রস্তাবই আর্থিক ও কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসির সুপারিশে রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান দুবাইয়ের মেসার্স ক্রেডেন্টওয়ান এফজেডসিও-র নিকট থেকে প্রতি টন ৩৫৫.৯৯ মার্কিন ডলার হিসেবে ১ কোটি ৭৭ লাখ ৯৯ হাজার ৫০০ ডলারে ৫০ হাজার টন নন বাসমতি সিদ্ধচাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ২১৬ কোটি ৯০ লাখ ৪৭ হাজার ৭০ টাকা। প্রতি কেজি চালের দাম ধরা হয়েছে ৪৩ টাকা ৩৮ পয়সা। বৈঠকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আরেক প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে মিয়ানমার সরকারের কাছ থেকে সরকার (জিটুজি) পর্যায়ে ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। প্রতি কেজি আতপ চালের দাম ধরা হয়েছে ৪৫ টাকা ৮৭ পয়সা।
জানা গেছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে ও জনস্বার্থে রপ্তানিকারক দেশ হতে জিটুজি ভিত্তিতে ২ লাখ টন চাল আমদানির জন্য গত ৩০ সেপ্টেম্বর ‘অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’ থেকে অনুমোদন দেওয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে দেশের সরকারি খাদ্য মজুত বৃদ্ধি করে সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখার স্বার্থে ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল জিটুজি পদ্ধতিতে মিয়ানমার থেকে আমদানির জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রস্তাব পাঠানো হয়।
বাংলাদেশের প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে মিয়ানমার চাল সরবরাহের আগ্রহ ব্যক্ত করে পত্র প্রেরণ করে। পরে দুই দেশেরে মধ্যে নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে নির্ধারিত প্রতি টন ৩৭৬.৫০ মার্কিন ডলার হিসেবে মোট ১ কোটি ৮৮ লাখ ২৫ হাজার ডলারে ৫০ হাজার টন আপত চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় এই চাল আমদানি করতে মোট ব্যয় হবে ২২৯ কোটি ৩২ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ টাকা। মিয়ানমার রাইস ফেডারেশন থেকে এই চাল আনা হবে।