
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, চিংড়ির উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি নিরাপদ ও গুণগত উৎপাদন নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। গতকাল সোমবার সকালে চকরিয়া উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের রামপুর মৌজায় অবস্থিত ৪৮ একর আয়তনের প্রদর্শনী চিংড়ি খামারে মৎস্য অধিদপ্তরাধীন সরকারি চিংড়ি এস্টেটের ইজারাগ্রহীতা ও চিংড়ি চাষিদের সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে টিকে থাকতে হলে গুড অ্যাকুয়াকালচার প্র্যাকটিস অনুসরণ এবং অ্যান্টিবায়োটিকমুক্ত উৎপাদন নিশ্চিত করতে হবে, অন্যথায় বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী বাগদা চিংড়ি রপ্তানিতে ঝুঁকির মুখে পড়বে।
মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, বাগদা চিংড়ি বাংলাদেশের একটি বিশেষ পরিচয় বহন করে। তাই এর সুনাম রক্ষা করা আমাদের সবার দায়িত্ব। চিংড়ি চাষের সঙ্গে ম্যানগ্রোভ বা প্যারাবন সংরক্ষণ ও সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন। উপদেষ্টা চিংড়ি চাষিদের নিরাপত্তা, ভূমি ব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামোগত সমস্যার সমাধানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয়ের আশ্বাস দিয়ে বলেন, সরকার ও চাষিদের যৌথ প্রচেষ্টায় বাগদা চিংড়িকে দেশীয় চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের গুরুত্বপূর্ণ খাতে পরিণত করা সম্ভব হবে।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন- মৎস্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. জিয়া হায়দার চৌধুরী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. হেমায়েত হোসেন, যুগ্ম সচিব ড. আবু নঈম মুহাম্মদ আবদুছ ছবুর, মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক ড. মো. মোতালেব হোসেন, কক্সবাজার চিংড়ি চাষ সম্প্রসারণ অঞ্চলের উপ-পরিচালক অধীর চন্দ্র দাস, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. নাজমুল হুদা। এছাড়াও চকরিয়া চিংড়ি এস্টেটের বিভিন্ন প্রকল্পের ইজারা গ্রহীতা, মৎস্যচাষি, মৎস্যজীবী এবং স্থানীয় জনগণ সভায় অংশগ্রহণ করেন। কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার রামপুর মৌজায় অবস্থিত মৎস্য অধিদপ্তরাধীন ৭,০২১.৭৬ একর আয়তনের চিংড়ি এস্টেটটি পর্যায়ক্রমে মৎস্য অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর মধ্যে ১৯৭৮ সালে ৫০০০ একর এবং ১৯৮২ সালে ২,০২১.৭৬ একর জমি কৃষি ও বন মন্ত্রণালয় হতে হস্তান্তরিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৮৫-৮৬ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (আইডিএ)-এর অর্থায়নে চিংড়ি চাষ প্রকল্পের আওতায় ৫০০০ একর জমি ১০ একর বিশিষ্ট ৪৬৮টি প্লটে ও এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)-এর অর্থায়নে মৎস্য চাষ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২,০২১.৭৬ একর জমি ১১৯টি প্লটে বিভাজন ও উন্নয়ন করা হয়।