
১৯৭৯ সালের পর স্বর্ণের সবচেয়ে পর্যন্ত সময় চলছে এখন। চলতি বছর নিউইয়র্কে যে স্বর্ণের আগাম লেনদেন হয়, সেখানে মূল্যবান এই ধাতুর দাম বেড়েছে ৭১ শতাংশ। এর আগে এক বছরে সবচেয়ে বেশি স্বর্ণের দাম বেড়েছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের সময়। তখন মধ্যপ্রাচ্যে সংকট চলছিল। ইরানে হয়ে গেছে ইসলামি বিপ্লব।
বাড়ছিল মূল্যস্ফীতি এবং যুক্তরাষ্ট্রে চলছিল জ্বালানি সংকট। নানাবিধ সংকটে ১৯৭৯ সালে স্বর্ণের দাম ১২৬ শতাংশ বেড়েছিল। বছরের শুরুতে আউন্সপ্রতি স্বর্ণের দাম ছিল ২২৬ ডলার। বছরের শেষে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫১২ ডলার। তার ৪৬ বছর পর স্বর্ণের আগাম দাম বাড়ল ৭১ শতাংশ। এর মধ্যে আর কোনো বছরে স্বর্ণের দাম এতটা বাড়েনি।
অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, তখনো নানাবিধ সংকট ছিল। সংকটের মধ্যেই সাধারণত স্বর্ণের মূল্য বৃদ্ধি পায়। এখনও সংকট আছে, যদিও তার চরিত্র ভিন্ন।
এখনকার মূল সংকট হলো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত পাল্টা শুল্ক। রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট তো চলছেই। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার তেলবাহী ট্যাংকার আটকে দিয়ে নতুন সংকটের সৃষ্টি করছে। বিনিয়োগকারীরা মনে করেন, সংকটের মধ্যে স¦র্ণ কেনাই ভালো। মূল্যস্ফীতি বাড়বে বা কমবে, ডলারের মূল্যমান কমবে বা বাড়বে; কিন্তু স্বর্ণের দাম সচরাচর কমে না। ফলে স্বর্ণের এ বাড়বাড়ন্ত।
বাস্তবতা হলো বছরের শুরুতে আউন্সপ্রতি স্বর্ণের আগাম দাম ছিল ২ হাজার ৬৪০ ডলার। বছরের শেষ প্রান্তে এসে সেই স্বর্ণের আগাম দাম আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ৫০০ ডলারে উঠেছে।
বিনিয়োগ ব্যাংক জেপি মরগ্যানের বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ২০২৬ সালে আউন্সপ্রতি স্বর্ণের দাম পাঁচ হাজার ডলারে উঠতে পারে।
চলতি বছর স্বর্ণের দাম যতটা বেড়েছে, অন্য কোনো বিনিয়োগের মুনাফা অতটা বাড়েনি। চলতি বছরে স্বর্ণের দাম বেড়েছে ৭১ শতাংশ।