ঢাকা বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সাফের মঞ্চ মাতিয়ে এশিয়ায় চোখ সাগরিকার

সাফের মঞ্চ মাতিয়ে এশিয়ায় চোখ সাগরিকার

শক্তিশালী নেপালকে হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা অক্ষুণ্ণ রেখেছে বাংলাদেশ দল। এই জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন ফরোয়ার্ড মোসাম্মাৎ সাগরিকা। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে হ্যাটট্রিকসহ চারটি গোলই করেছেন তিনি। নেপালের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে লালকার্ড দেখে তিন ম্যাচ নিষিদ্ধ ছিলেন সাগরিকা। গত সোমবার মাঠে ফিরেই দেখিয়েছেন তার পায়ের জাদু। প্রথম ম্যাচে শ্রীলংকার বিপক্ষে হ্যাটট্রিক, দ্বিতীয় ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে এক গোলের পর শেষ ম্যাচে করেছেন এক হালি। ৮ গোল করা এই স্ট্রাইকার শেষ ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও জিতেছেন।

নেপালের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে সিমরান রাইয়ের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়ানোয় তিন ম্যাচ নিষিদ্ধ ও ৬০ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হয়েছিল সাগরিকাকে। সেই নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরেই ৪ গোল করলেন প্রতিভাবান এই ফরোয়ার্ড। তাতে হয়তো জবাব দিলেন লাল কার্ড পেয়ে লঘু পাপে গুরুদন্ড পাওয়ারও। এবারের টুর্নামেন্টে ৮ গোল করলেন সাগরিকা, যা সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশিদের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ৮ গোল ছিল সিরাত জাহানের। তবে এবারের টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি গোলের কীর্তিটা গড়া হয়নি সাগরিকার। ১০ গোল করে সবাইকে ছাড়িয়ে নেপালের পূর্ণিমা রাই। যে কোনো টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড়। সদ্য সমাপ্ত সাফ অনূর্ধ্ব-২০ টুর্নামেন্টে সেরা খেলোয়াড় পুরস্কার নিয়ে বয়কট পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে সাফ। বাংলাদেশের ফুটবলার সাগরিকাকে মোস্ট ভেল্যুয়েবল পুরস্কারের স্বীকৃতি দিয়েছে। এ নিয়ে গতকাল সাফের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে পোস্টও হয়েছে। ফেসবুক ও সাগরিকার ট্রফিতে মোস্ট ভেল্যুয়েবল থাকলেও পুরস্কার প্রদান মঞ্চে উপস্থাপক তাকে গতকালের ম্যাচের সেরা বলেছেন। বাফুফে ফেসবুক ও মিডিয়ায় আবার সাগরিকার স্বীকৃতিতে মোস্ট ভেল্যুয়েবল প্লেয়ার (ফাইনাল) আখ্যায়িত করছে। অথচ টুর্নামেন্টে আনুষ্ঠানিক কোনো ফাইনাল ম্যাচ নেই।

সাফের ফেসবুক পোস্ট ও ট্রফি, পুরস্কার প্রদান মঞ্চে উপস্থাপকের তথ্য ও বাফুফের পোস্টে তিন রকম দাঁড়িয়েছে সাগরিকার স্বীকৃতি। সাফের সাধারণ সম্পাদক পুরুষত্তোম ক্যাটেলকে এ নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘টুর্নামেন্ট সেরা নয় গতকালের ম্যাচ সেরার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।’ ডাবল রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে হওয়া টুর্নামেন্টে আনুষ্ঠানিক কোনো ফাইনাল ম্যাচ নেই। অন্য ১১ ম্যাচে ম্যাচ সেরার স্বীকৃতি ছিল না। বাংলাদেশ-নেপাল ম্যাচেই কেন ম্যাচ সেরার স্বীকৃতি স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে। বয়সভিত্তিক পর্যায়ে টুর্নামেন্টে কোনো প্রাইজমানি নেই। ট্রফিই ফুটবলারদের প্রাপ্তি সেখানে টুর্নামেন্ট সেরার স্বীকৃতি থাকবে না কেন? এর উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমরা এখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করছি। সামনে খেলোয়াড়দের উৎসাহিত করতে প্রতি ম্যাচেই সেরার স্বীকৃতি দেওয়ার চেষ্টা থাকবে। পাশাপাশি টুর্নামেন্টের অন্যান্য স্বীকৃতিও।’ ম্যাচ সেরার স্বীকৃতি সাধারণত ছোট ক্রেস্ট দেওয়া হয়। সাগরিকা যে ট্রফি পেয়েছেন এটা মূলত সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারের মতোই। টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার আনুষ্ঠানিক না থাকলেও সেরা গোলরক্ষক (বাংলাদেশের মিলি) ও সর্বোচ্চ গোলদাতা পূর্ণিমা রায় ট্রফি পেয়েছেন। এবার সাফে প্রতিটি দল ছয়টি করে ম্যাচ খেলেছে। সাগরিকা টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় ম্যাচের মাঝামাঝি সময়ে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন।

এজন্য তিনি তিন ম্যাচ খেলতে পারেননি। টুর্নামেন্টে যিনি অর্ধেকের বেশি সময় খেলতে পারেননি এবং শাস্তির খড়গে ছিলেন। সেই ফুটবলার টুর্নামেন্ট সেরা হলে বড় প্রশ্ন উঠবে এজন্য সাফ কাল পুরস্কার মঞ্চে মোস্ট ভেল্যুয়েবল প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচের ঘোষণা দিয়েছে শেষ মুহূর্তে। আজ নানা সমালোচনার পর সাফ ফেসবুক পোস্টও এডিট করেছে। পুরস্কার যাই হোক সাগরিকার চোখ এখন এয়িশান কাপে। সুযোগ কাজে লাগাতে চান সাগরিকা, ‘আমরা এএফসির জন্য অনেকটাই প্রস্তুত আছি। সামনে যে কদিন সময় পাব, নিজেদের আরও ভালো করে তৈরি করব। সেখানে আরও ভালো পারফর্ম করতে হবে। যেহেতু তাদের সম্পর্কে জানা নেই, কোচ যেভাবে নির্দেশনা দেবেন, সেভাবে খেলার চেষ্টা করব।’ সাগরিকা এক নন, সদ্য শেষ হওয়া সাফে আলো ছড়ানো নবীরণ খাতুন ও শান্তি মার্ডিরও চোখ এশিয়ান বাছাইয়ে। যদিও বাছাইয়ে বাংলাদেশের অতীত রেকর্ড মোটেও সুখকর নয়। এশিয়ান কাপে জায়গা পাওয়া দূরের কথা, এখন পর্যন্ত বাছাইয়ে ১২ ম্যাচে দুটি জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত