
অনেকের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ নিয়ে এমন যাত্রাকে মানব পাচার বলে অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। আগামী শুক্রবার রওয়ানা হওয়ার কথা দলটির। যদিও এরইমধ্যে আটজন ভিসা পেয়েছেন। বাকিদের ভিসা পাওয়ার কথা আজ। ক্রীড়াদল পাঠানোর আড়ালে মানব পাচারের অভিযোগ নতুন নয়। এবার সেই অভিযোগ উঠল তায়কোয়ান্দো ফেডারেশন অব বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। সরকারি আদেশ (জিও) ছাড়াই খেলার কথা বলে ১২ জনকে ইতালি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়া ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংগঠনের নাম ওয়ার্ল্ড তায়কোয়ান্দো ফেডারেশন (ডব্লুটিএফ)। আর উত্তর কোরিয়া ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংগঠনের নাম ইন্টারন্যাশনাল তায়কোয়ান দো ফেডারেশন (আইটিএফ)। বাংলাদেশে ওয়ার্ল্ড তায়কোয়ান্দো ফেডারেশনের তালিকাভুক্ত সংগঠনের নাম বাংলাদেশ তায়কোয়ান্দো ফেডারেশন (বিটিএফ)। অন্যদিকে ইন্টারন্যাশনাল তায়কোয়ান দো ফেডারেশনের বাংলাদেশি সংগঠন বাংলাদেশ আইটিএফ তায়কোয়ান দো। তবে অভিযুক্ত তায়কোয়ান্দো ফেডারেশন অব বাংলাদেশ এই দুটি সংগঠনের কোনটিরই অন্তর্ভুক্ত নয়। তাহলে কিভাবে তারা ইতালির জেসোলোতে ৩-১৩ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় আইটিএফ তায়কোয়ান দো ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে খেলতে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত তায়কোয়ান্দো ফেডারেশন অব বাংলাদেশের কর্মকর্তা সানা রানী রায় বলেন, ‘আমাদের কাছে আমন্ত্রণপত্র এসেছিল। তাই আমরা যাচ্ছি।’ মানব পাচারের অভিযোগের বিষয়ে স্বান্তনা রানীর কথা, ‘তারা খেলোয়াড় বলেই ভিসা পেয়েছে। অবশ্যই তারা জাতীয় পর্যায়ে পদক জিতেছে। এখানে মানব পাচারের কোনো বিষয় নেই।’ আইটিএফ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে খেলতে যাওয়া নিজের ক্লাবকে বাংলাদেশ তায়কোয়ান্দো ফেডারেশেনর অধিভুক্ত দাবি করে সাবেক এই আইটিএফ খেলোয়াড় বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ তায়কোয়ান্দো ফেডারেশনের অধিভুক্ত ক্লাব। প্রজ্ঞাপন জারির পরেই আমরা সরকারি ফি দুই হাজার টাকা ফি দিয়ে আবেদন করেছি। যদিও এখনও অধিভুক্ত হয়েছি কি না জানি না। তবে তারা আমাদের অনুমোদন দিয়েছে।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ তায়কোয়ান্দো ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক লে. কর্নেল মো. এরশাদুল হক বলেন, ‘তায়কোয়ান্দো ফেডারেশন অব বাংলাদেশ নামে আমাদের কোনো ক্লাব নেই। আমরা এ বিষয়ে কিছুই জানি না। তবে দুই তায়কোয়ান্দো আলাদা। আর তায়কোয়ান্দোর কোনো ক্লাব বাংলাদেশ নাম লিখতে পারে না।’ আইটিএফ বাংলাদেশের সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদ সোলায়মান শিকদার বলেন, ‘এমন কোনো ক্লাব আমাদের আইটিএফ বাংলাদেশের অধিভুক্ত নয়।’ তায়কোয়ান্দো ফেডারেশনের সিনিয়র সহসভাপতি ও সাবেক তারকা ফুটবলার হাসানুজ্জামান খান বাবলু বলেন, ‘আমরা একটি নিয়ম করছি যে, দেশের সব তায়কোয়ান্দো ক্লাব ‘বাংলাদেশ তায়কোয়ান্দো ফেডারেশন’ নামের সংগঠনের ছাতার নিচে আসবে।’
এর আগেও অনেকবার মানব পাচারের অভিযোগ উঠেছিল বিভিন্ন ক্রীড়া ফেডারেশনের বিরুদ্ধে। তায়কোয়ান্দোর অনেক সংগঠকদের ভাষ্য, ‘এভাবে নামে বেনামে কিছু সংগঠন বিভিন্নভাবে খেলার কথা বলে বিদেশে নিয়ে গিয়ে ক্রীড়াবিদদের রেখে আসে। যাতে আমাদের দেশের বদনাম হয়। এগুলো রুখে দেওয়া প্রয়োজন। নইলে অদূর ভবিষ্যতে কোনো দেশই আর আমাদেরকে বিদেশে খেলতে ডাকবে না।’