
হারলেই বিদায়। টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাবে শূন্য হাতে। বাঁচা-মরার এই লড়াইয়ে ঢাকা ও রংপুর বিভাগ কেউ কাউকে ছাড় দিল না। তাদের ম্যাচের উত্তেজনা ছড়ালো বেশ। লো স্কোরিং কিন্তু হাড্ডাহাড্ডি এক লড়াইয়ের দেখা মিলল সিলেটে। জাতীয় ক্রিকেট লিগের ম্যাচে শেষ ৪ বলে রংপুরের দরকার ৪ রান। শেষ ব্যাটার হিসেবে খুড়িয়ে খুড়িয়েঢ ক্রিজে আসেন সাকলায়েন। রিপন মন্ডলের পরের ২ বলে ২ রান পায় রংপুর। পঞ্চম বলে চলে আসে মাহেন্দ্রক্ষণ। রিপনের লেন্থ বল মিডঅন দিয়ে উড়িয়ে চার মারেন সাকলায়েন। ঢাকাকে হতাশ করে ওই চারে রংপুরের জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। তারা চলে যায় দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে। রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে জিতে ফাইনালে খেলার আশা জিইয়ে রাখল গত আসরের চ্যাম্পিয়নরা। এবারের জাতীয় লিগ টি-টোয়েন্টির সবচেয়ে রোমাঞ্চকর লড়াইটি দেখা গেল সম্ভবত এলিমিনেটের ম্যাচে। ছোট রানের ম্যাচে বড় উত্তেজনা ছড়িয়ে ১ বল বাকি রেখে ১ উইকেটের জয়ে ঢাকা বিভাগকে বিদায় করে দিল রংপুর বিভাগ। শেষ শটের নায়ক সাকলাইন হলেও রংপুরের জয় মূল নায়ক তাদের অধিনায়ক আকবর আলি। ১২৪ রান তাড়ায় ৫২ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে যখন ধুঁকছিল দল, পাল্টা আক্রমণে ২৭ বলে ৪৪ রানের ইনিংস খেলে দলকে জয়ের দুয়ারে নিয়ে যান তিনিই। এমনকি শেষ ওভারে যখন প্রয়োজন ৮ রান, রিপন মন্ডলের প্রথম বলে স্কুপ করে চার মেরে সমীকরণ নাগালে আনেন আকবর। কিন্তু আউট হয়ে যান পরের বলেই।
জয়ের আরেক নায়ক নাসুম আহমেদ। জাতীয় দলে ব্যস্ততার কারণে এবারের লিগে এটিই ছিল তার প্রথম ম্যাচ। সিলেটের নাসুম রংপুরের হয়ে খেলতে নেমে দারুণ বোলিংয়ে ২ উইকেট নেওয়ার পর ব্যাট হাতে খেলেন ২৬ রানের মহামূল্য ইনিংস। ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে আকবরের সঙ্গে তার ৬২ রানের জুটি রংপুর পৌঁছে দেয় জয়ের কিনারায়। রংপুরের এমন জয়ে বিফলে যায় ঢাকার মোসাদ্দেক হোসেনের অসাধারণ ইনিংস। দলের চরম বিপর্যয়ের মধ্যেও দুর্দান্ত পাল্টা আক্রমণে ৬ ছক্কায় ৩৬ বলে ৬১ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার পরে দারুণ আঁটসাঁট বোলিংও করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জিততে পারেনি দল। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে বিপাকে পড়ে যায় ঢাকা। নতুন বলে দুই বাঁহাতি স্পিনার নাসুম ও আবু হাশিম আর পরে নাসির হোসেনের অফ স্পিনে ২৪ রানের মধ্যে হারায় তারা ৪ উইকেট। ১০ ওভার শেষে তাদের রান ছিল কেবল ৪৩। এরপর এক প্রান্তে পাল্টা আক্রমণ চালান মোসাদ্দেক। আরেক প্রান্তে উইকেট পড়ে নিয়মিত। অধিনায়ক মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ২০ বলে ১০ করে আউট হন। পরের দিকে শুভাগত হোম একটি ছক্কায় করেন ১৫ রান। ঢাকাকে টেনে নেন মোসাদ্দেকই। শেষ পর্যন্ত ছয়টি ছক্কায় ৩৬ বলে ৬১ করে আউট হন তিনি শেষের আগের ওভারে। ঢাকা থামে ১২৩ রানে।
মাঝবিরতিতে টিভি সাক্ষাৎকারে নাসির হোসেন বলেন, ‘খুব ভালো একটা লক্ষ্য পেয়েছি, আশা করি আমরা আরামসে জিতে যাব।’ সেই নাসির আউট হন ২০ বলে ৯ রান করে। তার আগেই আউট হন আরও চার ব্যাটসম্যান। নাসিরের একটু পর যখন বিদায় নেন অভিজ্ঞ নাঈম ইসলাম, দ্বাদশ ওভারে রংপুরের রান তখন ৬ উইকেটে ৫২। সেখান থেকেই আকবর ও নাসুমের জুটি। দারুণ খেলকে দলকে জয়ের কাছে নেন দুজন।