
বাংলাদেশে ক্রিকেট আর ফুটবলের বাইরে অন্য খেলাগুলোতে ভবিষ্যৎ নেই বললেই চলে। তাই অন্য খেলাগুলোতে জীবিকার তাগিদে খেপ খেলতে বাধ্য হন খেলোয়াড়রা। ব্যাডমিন্টনে শাটলারদের অবস্থা ঠিক তেমনই। খেপ খেলতে খেলতে কেউ ভিশন ক্লান্ত, কেউ চোটাক্রান্ত। এই দুইয়েই ইউনেক্স-সানরাইজ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল চ্যালেঞ্জ এককে ইতি ঘটল স্বাগতিক শাটলারদের। গতকাল বুধবার শহিদ তাজউদ্দিন আহমেদ ইনডোর স্টেডিয়ামে বিদেশিদের কাছে বিধ্বস্ত ইমারতে শুধু দাঁড়িয়ে আছেন গৌরব সিংহ। প্রথম রাউন্ডে জিতে সেরা ৩২ এ জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।
ক’দিন আগে বাইক দুর্ঘটনায় বাঁ পায়ের বুড়ো আঙুল থেতলে যায় দেশের এক নম্বর শাটলার আবদুস সোয়াদের। বেশ কিছুদিন ভুগেছিলেন। কিন্তু পেটের টানে ফের ইনজেকশন নিয়ে খেপ খেলে বেড়িয়েছেন। দুঃখের খবর হল, দেশের এক নম্বর শাটলার কাল ভারতের কাছে হারলেন সরাসরি ২-০ সেটে। হেরে এককের প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নিয়েছেন এসএসএম সিফাত উল্লাহ, চিং মং মারমারা। বিশ্বস্ত্র সূত্রে জানা গেছে, খেপ (আউটডোর) খেলতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে গেছেন অনেকেই। তাই আন্তর্জাতিক এই টুর্নামেন্টে ভাল পারফরম্যান্স দেখাতে ব্যর্থ হচ্ছেন লাল সবুজের শাটলাররা। তবে সরাসরি মুখে বলেই ফেললেন আবদুস সোয়াদ, ‘আমাদের তো পেট চালাতে হবে। এখান থেকে তো মাসিক বেতন পাই না আমরা।
তাই আউটডোরে খেলতে হয়। এই অর্থ দিয়ে আমাদের চলতে হয়। পরিবারকে চালাতে হয়।’
কর্মকর্তারা হতাশার একটি দিন গুনছিলেন, ঠিক তখনি ঈশান কোনে আলোর রেখা হয়ে উঠলেন র্যাংকিংয়ে পাঁচে থাকা গৌরব সিংহ। সেরা ৩২- এ জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ান প্রতিযোগী পুস্কাল ইরু সুমাল্লা লাল-সুবজের প্রতিনিধি গৌরবের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি। ২১-১২ ও ২১-১২ পয়েন্টে ম্যাচ জেতেন জাতীয় ব্যাডমিন্টনে তিনবারের চ্যাম্পিয়ন সিলেটের ছেলে গৌরব। ম্যাচ শেষে গৌরব সিংহ বলেন, ম্যাচটি জিততে পেরে আমি অনেক খুশি। সামনে আরও ভালো খেলে আরও জয় নিয়ে কোর্ট ছাড়ব ইনশাল্লাহ।
ইন্টারন্যাশনাল লেভেলটা অনেক হাই। কে কখন ভালো খেলবে সেটা বলা যায় না। একজন জিতবে, একজন হারবে। বাকিরা কেন হেরে গেছে বলতে পারব না। তবে আমি আজ ভালো খেলেছি তাই জিতেছি।’
নিজের উন্নতি প্রসঙ্গে গৌরব জানান, ‘সাফ গেমস সামনে রেখে এখানে তিন মাসের দীর্ঘ প্রশিক্ষণের ভেতরে ছিলাম। নিয়মণ্ডশৃঙ্খলার ভেতরে ছিলাম। আমাদের বিদেশি কোচ ছিল এবং এসব সুবিধা থাকার কারণে আমি উন্নতি করতে পেরেছি। কীভাবে আরও ফুল স্পিডে খেলা যায় সেসব নিয়ে কাজ করেছি। স্পিডিংয়ে একটু লেকিংস ছিল। ১৬/১৭ পয়েন্টের পর আর ফাইট দিতে পারছিলাম না। সেসব নিয়ে পরে কাজ করেছি। উন্নত করার চেষ্টা করেছি।’
এদিকে এককেরে মতো ডাবসলেও বাংলাদেশের শুরুটা ভালো হয়নি। সহোদর সিফাত উল্লাহ গালিব এবং মোহাম্মদ সিবগাত উল্লাহ জুটি ভিয়েতনামের প্রতিযোগীর সামনে দাঁড়াতেই পারেননি।
সরাসরি সেটে হেরে গেছেন। ২১-১৫ ও ২১-১২ পয়েন্টের ব্যবধানে হেরেছেন চট্টগ্রামের জনপ্রিয় দুই শাটলার ভাই।