ঢাকা শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

আল্লাহর পছন্দ ধীরস্থিরতা

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ
আল্লাহর পছন্দ ধীরস্থিরতা

মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে আল্লাহর ইবাদতের জন্য। মানুষকে দিয়েছেন বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য ও অভ্যাস। কিছু কাজ করার আদেশ দিয়েছেন, করেছেন কিছু কাজ থেকে নিষেধও। উদ্দেশ্য মানুষকে পরীক্ষা করা, যাচাই করা। মানুষের সেই সহজাত অভ্যাসগুলোর একটি তাড়াহুড়া করা। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘মানুষ তো বড় ত্বরাপ্রবণ।’ (সুরা বনি ইসরাইল : ১১)।

আরেক আয়াতে এরশাদ হয়েছে, ‘সৃষ্টিগতভাবে মানুষ ত্বরাপ্রবণ।’ (সুরা আম্বিয়া : ৩৭)।

তাড়াহুড়া করা নিষেধ

আল্লাহতায়ালা মানুষকে কাজকর্মে তাড়াহুড়া করতে নিষেধ করেছেন। সবকিছু ধীরস্থিরতার সঙ্গে করতে বলেছেন। আল্লাহ তাড়াহুড়া পছন্দ করেন না। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আমি সত্বরই তোমাদের আমার নিদর্শনাবলি দেখাব। অতএব, আমাকে শীঘ্র করতে বলো না।’ (সুরা আম্বিয়া : ৩৭)।

আরেক আয়াতে এসেছে, ‘আল্লাহর নির্দেশ এসে গেছে। অতএব, এর জন্য তাড়াহুড়া করো না।’ (সুরা নাহল : ১)।

এছাড়া এ বিষয়ে বহু আয়াত রয়েছে। তাড়াহুড়া না করে ঠাণ্ডা মাথায় ধীরস্থিরভাবে কাজ করার অনুকূলে অনেক হাদিস এসেছে। তাইতো এটি হয়ে উঠেছে মুসলিমের অন্যতম বৈশিষ্ট্য, বিশেষ ক্ষেত্র ছাড়া তার বিপরীত হয় না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সুন্দর আচরণ, ধৈর্য ও মধ্যপন্থা অবলম্বন হলো নবুয়তের ৪০ ভাগের ১ ভাগ।’ (তিরমিজি : ২০১০)।

আল্লাহ ধীরস্থিরতা পছন্দ করেন

এক সাহাবির মধ্যে ধীরস্থিরতার গুণ ছিল। ব্যাপারটি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ভালো লাগত। আল্লাহতায়ালাও পছন্দ করেন সে গুণ। সাহাবিকে সে কথা জানালেনও এক দিন। আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) আবদুল কায়েস গোত্রের আশাজ আবদুল কায়েসকে বললেন, ‘তোমার মাঝে দুটি বিশেষ গুণ আছে, যা আল্লাহ পছন্দ করেন, সহিষ্ণুতা ও ধীরস্থিরতা।’ (মুসলিম : ১৭)।

দোয়ায় তাড়াহুড়া করা যাবে না

আল্লাহ মানুষকে সব সময় তাঁর কাছে দোয়া করতে বলেছেন। তিনি দোয়াকারীর দোয়া কবুল করেন। তবে তাড়াহুড়া করে দোয়া করতে নিষেধ করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের প্রত্যেকের দোয়া কবুল হয়ে থাকে, যদি সে তাড়াহুড়া না করে। আর এ কথা না বলে, দোয়া তো করলাম কিন্তু আমার দোয়া কবুল হলো না।’ (বোখারি : ৫৯৮১)।

ধীরস্থিতার সঙ্গে নামাজে আসতে হবে

রাসুলুল্লাহ (সা.) তাড়াহুড়া করে জামাতের নামাজ ধরতেও নিষেধ করেছেন। আবু কাতাদা (রা.) বলেন, ‘একবার আমরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে নামাজ আদায় করছিলাম। হঠাৎ তিনি লোকদের (ত্বরিত আগমনের) আওয়াজ শুনতে পেলেন।

নামাজ শেষে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমাদের কী হয়েছিল?’ তারা বললেন, ‘আমরা নামাজের জন্য তাড়াহুড়া করে আসছিলাম।’

রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘এমন করবে না। যখন নামাজে আসবে, ধীরস্থিরভাবে আসবে। (ইমামের সঙ্গে) যতটুকু পাও আদায় করবে, আর যতটুকু ছুটে যায় তা (ইমামের সালাম ফেরানোর পর) আদায় করে নেবে।’ (বোখারি : ৬০৯)।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত