অনলাইন সংস্করণ
১০:৩৬, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫
কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক রাতে পৃথক স্থানে পাঁচ ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) ভোর আনুমানিক পাঁচটার দিকে উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের মধুরছড়া ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি ব্লকের একটি হাসপাতালে আগুনের সূত্রপাত হয়।
ফায়ার সার্ভিস ও ব্লকের বাসিন্দাদের প্রায় আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় সকাল সাড়ে সাতটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে হাসপাতালটি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং পুড়ে গেছে মূল্যবান চিকিৎসা সামগ্রী।
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার থেকে নতুন করে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আগমনের পর দাতব্য সংস্থা ওবাট হেলপারস ইউএসএ ‘ওবাট হেলথ পোস্ট’ নামে হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করে। বর্তমানে হিউম্যান ইন্টারন্যাশনাল ইউএসএ নামের একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার অনুদানে ওবাট হেলপারস বাংলাদেশ ক্যাম্প প্রশাসনের সহায়তায় এই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটি পরিচালনা করছিল।
ওবাটের হেলথ কো-অর্ডিনেটর ডা. মাহামুদুল হাসান সিদ্দিকী রাশেদ বলেন, আকস্মিক অগ্নিকাণ্ডে পুরো হাসপাতালটি পুড়ে গেছে। কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এই হেলথপোস্ট থেকে আশপাশের রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠী বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা পেতেন।
মালয়েশিয়া হাসপাতাল নামেও পরিচিত এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির এমন পরিণতিতে আশাহত হয়েছেন অনেক রোহিঙ্গা। ব্লকের বাসিন্দা মোহাম্মদ রফিক বলেন, এই হাসপাতালটি তাদের পরিবারের ভরসাস্থল ছিল। পুড়ে যাওয়ায় তারা নিয়মিত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হলেন বলে তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করেন।
ধারণা করা হচ্ছে, এ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। উখিয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার ডলার ত্রিপুরা জানান, ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে উদ্ধার ও নিয়ন্ত্রণ তৎপরতায় কাজ করেছে। কেউ আহত হয়নি এবং আগুনের কারণ তদন্ত শেষে জানানো হবে।
এর আগে একই রাতে, হাসপাতাল অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে কুতুপালং নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বি ব্লকে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে আগুন লাগে। ওই ঘটনায় পাঁচটি ঘর পুড়ে যায়।
এদিকে গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর কুতুপালং ১ ডব্লিউ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সহস্রাধিক ঘর পুড়ে যায় এবং একজন নিহত হয়। শীত মৌসুমে এ ধরনের বারবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।