দিনাজপুরের পার্বতীপুর পৌরসভার অন্তত ৬০৫টি সড়কবাতি দীর্ঘদিন ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে। ফলে রাত হলেই পুরো এলাকা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে, যা চুরি-ছিনতাইসহ নানা অপরাধ বৃদ্ধির আশঙ্কা তৈরি করেছে। এতে আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা জরুরি প্রয়োজনেও রাতে বাইরে বের হতে ভয় পাচ্ছেন।
শুধু বিদ্যুতের সড়কবাতিই নয়, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরবরাহ করা ৮০টি সৌরবাতিরও কোনো হদিস নেই। ফলে নিয়মিত পৌরকর পরিশোধ করেও প্রয়োজনীয় সেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় ক্ষুব্ধ পৌরবাসী।
পৌরসভার নথি অনুযায়ী, ৪ হাজার ১০৬টি বিদ্যুতের খুঁটিতে ২ হাজার ৮৩৫টি সড়কবাতি থাকার কথা। তবে বাস্তবে কতগুলো বাতি সচল আছে, সে সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য দিতে পারেনি পৌর কর্তৃপক্ষ। শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ১ নম্বর ওয়ার্ডের ৬৪৭টি খুঁটিতে ৪০৯টি সড়কবাতি লাগানো হলেও এর মধ্যে ১২৪টি দীর্ঘদিন ধরে বিকল হয়ে আছে।
পৌরসভার বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ৯টি ওয়ার্ডে ৬০৫টি সড়কবাতি নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। ওয়ার্ডভিত্তিক সড়কবাতি বিকলের চিত্র পৌরসভার বিদ্যুৎ বিভাগের দাবি, পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে ৪০৯টি সড়কবাতির মধ্যে ১২৪টি নষ্ট, ২ নম্বর ওয়ার্ডে ২১৮টি সড়কবাতির মধ্যে ৩০টি নষ্ট, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৩৭৭টি সড়কবাতির মধ্যে ১০৮টি নষ্ট, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ৩৯৮টি সড়কবাতির মধ্যে ১৬৫টি নষ্ট, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ২৩৯টি সড়কবাতির মধ্যে ৩৩টি নষ্ট, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ৩১৯টি সড়কবাতির মধ্যে ২৭টি নষ্ট, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ২১৫টি সড়কবাতির মধ্যে ১৫টি নষ্ট, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ২১৫টি সড়কবাতির মধ্যে ১৫টি নষ্ট এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৩৮২টি সড়কবাতির মধ্যে ৮৩টি নষ্ট। ৯টি ওয়ার্ডে ৬০৫টি সড়কবাতি এখন অচল।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পৌরসভার প্রধান সড়ক, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, উপজেলা পরিষদের ডরমেটরি এলাকা, তালিমুনচ্ছো মহিলা আলিম মাদ্রাসা এলাকা, রংপুর রেলগেট থেকে টার্মিনাল সড়ক, দক্ষিণপাড়া বিবিসি মোড় থেকে রেলওয়ে পার্ক বাবুপাড়া, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার রোড এবং আমেরিকান ক্যাম্পের পুরো এলাকা অন্ধকারে নিমজ্জিত।
আমেরিকান ক্যাম্পের বাসিন্দা নুরনবী, হারুন, পাপ্পু ও মৌসুমী আকতার সুমী জানান, দীর্ঘদিন ধরে সড়কবাতিগুলো অচল থাকায় চুরি-ছিনতাই বেড়ে গেছে। ফলে রাতে প্রয়োজনেও বাইরে বের হতে ভয় পাচ্ছেন তারা।
এ বিষয়ে পার্বতীপুর পৌরসভার বিদ্যুৎ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার মহন্ত বলেন, ‘আমাদের ভিম লিফট গাড়ি (উঁচুতে কাজ করার বিশেষ যান) না থাকায় সড়কবাতিগুলো মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে আমাদের কাছে ৬০৫টি নষ্ট সড়কবাতির তথ্য রয়েছে।’