রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে জমি দখলের উদ্দেশ্যে দোকানে হামলা, ভাঙচুর, মারধর ও চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় যৌথবাহিনীর তাৎক্ষণিক অভিযানে দু’জনকে আটক করা হয়েছে। তবে থানায় মামলা না হওয়ায় তাদেরকে ১৫১ ধারায় আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
আটককৃতরা হলেন- বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের পদমদী (দোপপাড়া) গ্রামের মৃত মজিদ এলাহীর ছেলে ঢাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. আকিদুল ইসলাম (৪২) এবং বালিয়াকান্দি মিয়াপাড়া গ্রামের খলিলুর রহমান মিয়ার ছেলে তারেক মিয়া আলমাস (৩৫)।
হামলার শিকার ওষুধ ব্যবসায়ী মো. ফারুক হোসেন জানান, বুধবার (১১ জুন) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বালিয়াকান্দি বাজার চৌরাস্তার সোনাপুর রোডে তার 'আরোগ্য ফার্মেসী'তে ২০–২৫ জন অস্ত্রধারী হামলা চালায়। তারা দোকানে ঢুকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে চুন্নুর নেতৃত্বে তারা তাকে মারধর করে ও হত্যার চেষ্টা চালায়। তার মাথা, মুখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম হয়।
ফারুক হোসেন অভিযোগ করেন, হামলাকারীদের মধ্যে ছিলেন ঢাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ী আশিক মাহমুদ, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার মশিউল আজম চুন্নু, জামায়াত নেতা ও ব্যবসায়ী উসমান গণি মানিক, মো. মুরাদ, মো. নুরু, মো. সালাউদ্দিন, মো. কামাল, মো. খলিলসহ আরও অনেকে। তারা দোকান থেকে ওষুধ বিক্রির নগদ ৮ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায় এবং ওষুধ ও পাশের মিষ্টির দোকানের মালামাল ভাঙচুর করে।
আহত অবস্থায় স্থানীয়দের সহায়তায় ফারুক হোসেনকে বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
তিনি আরও দাবি করেন, চুন্নু একটি চিহ্নিত সন্ত্রাসী বাহিনীর নেতৃত্ব দেন এবং পূর্বেও চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকলেও প্রভাব খাটিয়ে অনেক সময় তা রেকর্ড হতে বাধা দেন।
ফারুক হোসেন অভিযোগ করেন, বালিয়াকান্দি থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে গেলে তা গ্রহণ করা হয়নি। পরে তিনি সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে অভিযোগ করেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, বালিয়াকান্দি বাজারের জমি নিয়ে ঢাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ী আশিক মাহমুদ ও আকিদুল ইসলামের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। ওই জমি দখল করতে গিয়েই এ ঘটনা ঘটেছে।
বালিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জামাল উদ্দিন বলেন, “ঘটনার বিষয়ে নির্দিষ্ট অভিযোগ দিলে মামলা নেওয়া হবে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। আটক দু’জনকে ১৫১ ধারায় আদালতে পাঠানো হয়েছে।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত চুন্নু ও আশিক মাহমুদের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।