চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন আয়োজিত অমর একুশে বইমেলার পর্দা আনুষ্ঠানিকভাবে নামল বুধবার। ২৬ দিনের এই বইমেলা চট্টগ্রামের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিশেষ নজির গড়ে তুলেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তবে মেলা শেষ হলেও পাঠকরা বই কেনার সুযোগ পাবেন আরও দু-দিন, অর্থাৎ শুক্রবার পর্যন্ত বইমেলার স্টল খোলা থাকবে।
বইমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে ২০২৪ সালের চসিক একুশে সম্মাননা পদক প্রদান করা হয় ১৫ জন গুণীজনকে। ভাষা আন্দোলনে অবদান রাখায় মরহুম বদিউল আলম চৌধুরী, সমাজসেবা ও গবেষণায় অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া, চিকিৎসা বিজ্ঞানে অধ্যাপক ইমরান বিন ইউনুস, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা আন্দোলনে বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, সমাজসেবায় কামরুন মালেক, সংগীতে নকীব খান, সাংবাদিকতায় জাহেদুল করিম এবং ক্রীড়ায় তামিম ইকবাল খানকে সম্মাননা জানানো হয়।
এছাড়া, সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন— কথাসাহিত্যে অধ্যাপক আসহাব উদ্দিন আহমদ (মরণোত্তর), প্রবন্ধ ও গবেষণায় অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান, শিশুসাহিত্যে মিজানুর রহমান শামীম, শিশু-চিকিৎসা সাহিত্যে অধ্যাপক প্রণব কুমার চৌধুরী, কবিতায় জিললুর রহমান এবং অনুবাদে ফারজানা রহমান শিমু।
সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, "চট্টগ্রামে আর পাহাড় কাটা চলবে না। শ্রমিক নয়, এখন থেকে পাহাড় কাটার মূল হোতা, অর্থাৎ মালিকদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিতে হবে।" তিনি পাহাড় কাটার তথ্য জেলা প্রশাসক কিংবা প্রয়োজনে সিটি করপোরেশন মেয়রকে জানানোর আহ্বান জানান। সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চসিক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, "এবারের বইমেলার অন্যতম সফল দিক হলো, আমাদের নিজস্ব শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ। বাইরের শিল্পী নয়, চসিকের শিক্ষার্থীরাই মেলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলোতে নিজেদের প্রতিভা তুলে ধরেছে। এই অংশগ্রহণ ভবিষ্যতে তাদের আত্মবিশ্বাস ও দক্ষতা বাড়াবে।"
মেয়র মেলায় অংশ নেওয়া ১৫০টিরও বেশি স্টল, প্রকাশক ও লেখকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং চট্টগ্রামবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। এছাড়া বক্তব্য দেন পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া, দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক, অধ্যাপক ইমরান বিন ইউনুস এবং মরহুম বদিউল আলম চৌধুরীর কন্যা নাজনীন কাউসার চৌধুরী।
পদকপ্রাপ্তদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন প্রধান অতিথি, মেয়রসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন চসিক সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা, শিক্ষা কর্মকর্তা মোছাম্মৎ রাশেদা আক্তার, সমাজকল্যাণ ও সংস্কৃতি কর্মকর্তা মামুনুর রশীদসহ চট্টগ্রামের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।