রংপুরে উদ্বোধন করা হয়েছে আধুনিক ডপলার রাডার স্টেশন।
রোববার (১১ মে) সকালে নগরীর কলেজ রোডস্থ আবহাওয়া অফিসে আনুষ্ঠানিক ভাবে এর উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের আবহাওয়া বিভাগের পরিচালক মোমেনুল ইসলাম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক আবহাওয়া পরামর্শদাতা ইয়োশিহিসা উচিদা, উপ-পরিচালক আহমেদ আরিফ রশিদ, রংপুর আবহাওয়া, রাডার ও ভূ-কম্পন পর্যবেক্ষণাগারের কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান সহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
পরে পরিচালক মোমেনুল ইসলাম বিফ্রিং এ বলেন, এটি রংপুর আবহাওয়া, রাডার ও ভূ-কম্পন পর্যবেক্ষণাগারে স্থাপিত হয়েছে। এই ডপলার রাডার স্টেশন স্থাপনের ফলে আবহাওয়ার পূর্বাভাস আরও নিখুঁত এবং সময়োপযোগী হবে। এটি বিশেষ করে বৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড় এবং অন্যান্য আবহাওয়ার বিশ্লেষণে খুবই কার্যকর হবে।
তিনি জানান, এরকম আরো তিনটি রাডার স্টেশন হতে যাচ্ছে বাংলাদেশে। ডপলার রাডার কৃষিনির্ভর উত্তরাঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এটি উদ্বোধন হওয়ার মধ্য দিয়ে সাড়ে ৪০০ কিলোমিটার এলাকার মানুষজন আগাম আবহাওয়ার তথ্য জানার নতুন দিগন্তে প্রবেশ করেছে।
আন্তর্জাতিক আবহাওয়া পরামর্শদাতা ইয়োশিহিসা উচিদা এসময় বলেন, "রংপুরে এই ধরনের প্রযুক্তি স্থাপন একটি বড় অগ্রগতি। এটি শুধু স্থানীয় পর্যায়ে নয়, জাতীয় পর্যায়ে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরও নির্ভুলতা আনবে।"
ডপলার রাডার স্টেশন উদ্বোধনের মাধ্যমে রংপুর অঞ্চলে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণে একটি নতুন দিগন্তের সূচনা হলো। এটি আবহাওয়ার পূর্বাভাসের নির্ভুলতা ও সময়ানুগতার দিক থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে আগাম পূর্বাভাসে কমবে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি।
এ বিষয়ে রংপুর আবহাওয়া, রাডার ও ভূ-কম্পন পর্যবেক্ষণাগারের কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নতুন স্থাপিত ডপলার রাডারের মেয়াদকাল ১৫ বছর। আশা করছি, নতুন এই রাডারটি উত্তরাঞ্চলের অর্থনীতি কৃষির সঙ্গে জড়িত। প্রতি বছর খরা, বন্যা, অতিবৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে আমাদের কোটি কোটি টাকার ফসলহানি হয়। বজ্রপাতের কারণে দিন দিন মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে চলছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস না থাকায় মৌসুমি রোগব্যাধিও বাড়ছে। তাই এখানে ডপলার রাডার স্থাপন করা অত্যন্ত জরুরি ছিল।
নতুন এ রাডার স্টেশন চালু হলে মেঘের অবস্থান, গতি, দিক, তাপমাত্রা জানতে পারব। বজ্রপাতের পূর্বাভাস দেওয়ার মাধ্যমে মৃত্যুর হার কমানো সম্ভব হবে। রেডজোনে অবস্থিত রংপুরে ভূমিকম্প ও বড় ধরনের বন্যার তথ্য দেওয়া যাবে। আগাম বৃষ্টিপাতের তথ্য দেওয়ার মাধ্যমে কৃষকদের ফসলের ক্ষতি থেকে রক্ষা করা যাবে। সেই সঙ্গে রংপুরের আবহাওয়ার অবস্থা ও পরিবর্তনজনিত কারণগুলো গবেষণা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে- যোগ করেন ওই আবহাওয়া কর্মকর্তা।