চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই–এপ্রিল) দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। এই সময়ে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬২৮ কোটি ২৮ লাখ টাকা, কিন্তু আদায় হয়েছে ৫৮১ কোটি ৫২ লাখ টাকা।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) হিলি বন্দরের জন্য এ বছর মোট ৭৪০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। এর মধ্যে এপ্রিল মাসেই দেখা দিয়েছে সর্বোচ্চ ঘাটতি— ৬৯ কোটি ৮৩ লাখ টাকার লক্ষ্যের বিপরীতে আদায় হয়েছে মাত্র ৪৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।
পণ্য আমদানি কমে যাওয়া, এইচএসকোডে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ, পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়া, কাস্টমস জটিলতা, অবকাঠামো সংকট এবং আমদানিকারকদের আগ্রহ হারানো— এসবকে ঘাটতির মূল কারণ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
হিলি কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফেরদৌস রহমান বলেন, "এই বন্দরে একই পণ্যে অন্য জায়গার তুলনায় বেশি শুল্ক আদায় করা হয়। ফলে আমদানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বিকল্প বন্দর ব্যবহারে ঝুঁকছেন।"
আমদানিকারক নূর ইসলাম জানান, হঠাৎ ডলারের দাম বৃদ্ধি, ভারতীয় ব্যবসায়ীদের পণ্যমূল্য বাড়ানো এবং কাস্টমসের অতিরিক্ত শুল্ক জটিলতার কারণে অনেকেই আমদানিতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।
একইভাবে আমদানিকারক দয়াল মোল্লা বলেন, “পাথর আমদানির উপর নির্ভর করতো এই বন্দর। এখন তা পুরোপুরি বন্ধ। অন্য বন্দরে সুবিধা থাকলেও এখানে পণ্যের লোকাল হ্যান্ডলিং খরচ বেশি।”
হিলি আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “১৫ এপ্রিল থেকে আইপির মেয়াদ শেষ হওয়ায় চাল ও পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ। ভারতের কিছু অঞ্চল থেকে পণ্য আসাও বন্ধ রয়েছে সাম্প্রতিক যুদ্ধাবস্থার কারণে। ফলে আমদানি কমে গেছে।”
হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন বলেন, “রেয়াতি শুল্কে চাল আমদানির সময়সীমা শেষ, ভুসি আমদানিও বন্ধ—এসব কারণে রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে। তবে সামনে কোরবানির ঈদে মসলাজাতীয় পণ্যের আমদানি বাড়বে, তখন ঘাটতি অনেকটাই পুষিয়ে যাবে বলে আমরা আশাবাদী।”
আবা/সজল