জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির অধ্যাদেশ জারি বাতিলসহ ৪ দফা দাবিতে টানা দুইদিনের কর্মবিরতিতে অচল হয়ে পড়েছে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর। ফলে আমদানি-রপ্তানি পণ্যের শুল্কায়ন কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এর ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন বন্দরের আমদানিকারকরা। গত ১৪ মে থেকে তাদের এই কর্মবিরতি চলছে। তবে কয়েক ঘণ্টা করে কর্মসূচি চললেও গত শনিবার ও রোববার সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালিত হয়। আজ সোমবারও পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনে কাস্টমস কর্মকর্তারা কর্মবিরতি পালন করছেন। কর্মকর্তা শূন্য শুল্ক স্টেশন। অনেকে স্থল শুল্ক স্টেশন কার্যালয়ের পাশে অবস্থান করছেন। কোনো কাজকর্ম করতে দেখা যায়নি।
বন্দরের আমদানিকারকরা বলেন, ‘কাস্টমস অফিসারদের কর্মবিরতির ফলে বন্দরে আমাদের আমদানি করা পণ্য খালাস করতে না পারায় বন্দর কর্তৃপক্ষকে অতিরিক্ত ভাড়া পরিশোধ করতে হচ্ছে। এতে করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হচ্ছে।’
হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের কর্মকর্তারা জানান, এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকা কর্মবিরতি একযোগে সারাদেশে পালিত হচ্ছে। এই কর্মবিরতিতে সহমত পোষণ করে হিলি স্থলবন্দরেও পালিত হচ্ছে। রোববার বিকেলে ঢাকায় এনবিআর প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কোন ফলপ্রসূ আলোচনা না হওয়ায় সোমবার পূর্নদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে। আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ব্যতীত আমদানি-রপ্তানি করা পণ্য শুল্কায়ন ও পরীক্ষণ বন্ধ থাকবে। তবে যাত্রীসেবা চালু থাকায় হিলি চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক থাকবে।
এদিকে বন্দরের বেসরকারি অপারেটর পানামা হিলি বন্দর সূত্রে জানা যায়, এমবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকা কর্মবিরতিতে হিলি কাস্টমসে শুল্কায়ন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বেশ কিছু আমদানি করা পণ্যবাহী ট্রাক বন্দরে শুল্কায়ন জটিলতায় পণ্য খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে।বন্দর সূত্রে আরও জানা যায়, গত দুই দিনের কর্মবিরতিতে আমদানি করা নিত্যপণ্য, মসলাজাতীয় পণ্য বোঝাই শতাধিক ট্রাক বন্দর অভ্যন্তরে শুল্কায়নের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক-রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক জানান, কাস্টমস কর্মকর্তারা কর্মবিরতি পালন করায় বন্দরে শতাধিক ট্রাক পণ্যবাহী ট্রাক খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। এতে করে আমদানি করা পণ্যের জন্য অতিরিক্ত বন্দর ভাড়া ও গাড়ি ভাড়া গুণতে হচ্ছে। সেইসঙ্গে পচনশীল পণ্য নষ্ট হওয়ায় আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে করে ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। আর দু’এক দিন এভাবে চললে অনেক ব্যবসায়ীকে মূলধন হারিয়ে পথে বসতে হবে।