দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার নিজপাড়া ইউনিয়নের জালিয়াপাড়া ও নখাপাড়া এলাকায় ঢেপা নদীর ভাঙ্গনে দুশ্চিন্তায় নদী পাড়ের মানুষ। গত ৪ বছরে নদী গর্ভে ৩শ থেকে ৪শ বিঘা জমি বিলীন হয়ে গেছে। এতে বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মন্দির, দোকান ও বসতবাড়ি ভিটা ও ফসলি জমিও নদীতে ভাঙছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, নিজপাড়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড নখাপাড়া, মাঝাপাড়া, শাহাপাড়ার বসতভিটা, ফসলি জমি ও রাস্তা ধসে নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বাগানবাড়ি ও ফুটবল খেলার মাঠ বিলীন হয়ে নদীর চরে পরিণত হয়েছে এবং স্রোতের পানিতে নদী থেকে ৫০ ফিট উঁচু রাস্তাসহ শত বছরের পুরোনো গাছ ভেসে গেছে। আবার ৭নং ওয়ার্ডের জালিয়াপাড়ার ফুটবল খেলার মাঠ ও শ্মশান ঘাট নদীতে বিলীন হয়ে যার হয়ে গেছে। নতুন করে আবার পাড়ে থাকা বাড়ি ধসে নদীতে ভেসে যাওয়ার মত অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
নদীর ভাঙন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ-সহ কোনো বাধ না থাকায়, দুশ্চিন্তায় ভুগছেন নদীর তীরবর্তী মানুষ ও জেলেরা। নখাপড়ার কৃষক রুহুল আমিন বলেন, আমাদের ১ একর ফসলি জমি চলে গেছে। এখানে একটি বাগান বাড়ি ছিল, যা এখন বাগান বাড়ি নেই। সেটি নদীতে ভেসে গেছে। বর্তমানে একটি সরকারি স্কুল, মন্দির, রাস্তাঘাট সহ বসত ভিটা রক্ষার জন্য জরুরি বাঁধের প্রয়োজন।
সাহাপাড়ার কৃষক ধীরেন চন্দ্র বলেন, রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ায় অ্যাম্বুলেন্স, ভ্যান-রিক্সা চলাচল করতে পারে না। এমন দুর্ভোগে আমরা বসবাস করি। রাতের অন্ধকারে রাস্তায় চলাচলে ভয় লাগে, ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া।
মাঝাপাড়ার কুমদিনি রায় বলেন, আমরা নদী ভাঙ্গনের কারণে বসত বাড়ি টি কমপক্ষে ৫ বার সরিয়েছি। আবার হয়ত এবার পানির স্রোতে বাড়ি চলে যেতে পারে। আমরা খুব আতঙ্কে আছি।
জেলে পাড়ার নরেন রায় বলেন, আমাদের এখানে একটি ফুটবল খেলার মাঠ ছিল, নদীর মাধ্যমে ভেঙে ভেঙে এখন নদীর বালুরচর হয়ে গেছে। এখন মানুষের বাড়ি ভেঙ্গে নদীগর্ভে, আমাদের বাড়িও চলে যাচ্ছে। তাই সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
নিজপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান আনিস বলেন, ঐ এলাকায় বাঁধ না থাকায় নদীতে বিলীন হয়ে গেছে অনেক কিছুই। সেখানকার মানুষজন বাড়িঘর ভেঙে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। তাই ভাঙন প্রতিরোধে সরকারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুত নদীতে বাঁধে তৈরির জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।