
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের সেলদিয়া গ্রামে মাদকাসক্ত যুবক মো. নূরুল আমীন (১৯)-এর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে শুক্রবার দুপুরে তাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার বড় ভাই বনি আমীন ও মা হেলেনা বেগমের বিরুদ্ধে। বিকেলে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বারিষাব ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. বাবুল হোসেন জানান, সেলদিয়া গ্রামের হতদরিদ্র শাহজাহান (৬০) ভিটেমাটি ছাড়া আর কোনো জমিজমা নেই। তিনি ও তার স্ত্রী আশপাশের কয়েকটি গ্রামে মাটি কেটে জীবিকা নির্বাহ করেন। অনেক কষ্টে টাকা জোগাড় করে কয়েক বছর আগে বড় ছেলে বনি আমীনকে সৌদি আরবে শ্রমিক ভিসায় পাঠিয়েছিলেন। দুই মাস আগে তিনি ছুটিতে দেশে আসেন।
ছোট ছেলে নূরুল আমীন গত কয়েক বছর ধরে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। সে পরিবারের জিনিসপত্র এবং কাপড়চোপড় বিক্রি করে দিত, লোকজনের সঙ্গে খারাপ আচরণ করত। বিশেষ করে মাথায় নেশা উঠলে পিতার কাছে টাকা চাইত, না পেলে যা সামনে পেত তা ভাঙচুর করত এবং বাবা-মাকেও মারধর করত।
নিহতের পিতা মো. শাহজাহান জানান, মাদকাসক্ত ছেলে নূরুল আমীনকে ভালো করার জন্য দুই দফায় প্রায় তিন মাস মাদক নিরাময় কেন্দ্রে রেখে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ করেছেন, যা বড় ছেলের পাঠানো টাকায় মিটিয়েছেন। কিন্তু বাড়ি ফিরে সে আবার মাদক সেবন শুরু করে।
শুক্রবার সকালেও নূরুল আমীন মাদকের জন্য তার কাছে দুই হাজার টাকা দাবি করলে তিনি তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ সময় নূরুল বাড়িতে ভাঙচুর শুরু করলে তিনি ভয়ে বাড়ি থেকে চলে যান। পরে সে মায়ের কাছে টাকা চাইলে গালিগালাজ শুরু করে। তখন বড় ভাই এসে তাকে বেধড়ক পিটিয়ে মা ও ভাই মিলে ঘরে আটকে রাখে। পরে দুপুরের দিকে ঘরে গিয়ে তাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
কাপাসিয়া থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মন্ডল জানান, পারিবারিক কলহের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। নিহত ব্যক্তি মাদকাসক্ত ছিলেন। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।