ঢাকা সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

গজারিয়ায় পুলিশের ওপর গোলাগুলির ঘটনায় মামলা হয়নি

গজারিয়ায় পুলিশের ওপর গোলাগুলির ঘটনায় মামলা হয়নি

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার চরাঞ্চল খ্যাত গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের জামালপুরে পুলিশের ওপর ডাকাতদের গুলি ও ককটেল হামলার ঘটনায় মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বেলা ২টা পর্যন্ত মামলা হয়নি। ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। গত সোমবার বিকেলে হামলার ঘটনার পর থেকে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গতকাল বিকেল সোয়া পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা পৌনে ছয়টা পর্যন্ত গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের জামালপুর অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প-সংলগ্ন মেঘনা নদীতে পুলিশ ও ডাকাত দলের সদস্যদের মধ্যে শতাধিক গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এলাকার কয়েকটি দোকানপাট বন্ধ রয়েছে।

জামালপুর গ্রামের বাসিন্দা রুবেল সরকার বলেন, ‘গ্রামের লোকজনের মধ্যে অজানা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা ভয়ে নিরাপদ স্থানে অবস্থান করছি। সকাল থেকে পুলিশ ক্যাম্পেও পুলিশকে সতর্ক অবস্থানে দেখেছি। পুলিশের ওপর গুলিবর্ষণকারীরা বালু খেকো।এলাকায় নিয়ন্ত্রণ নিতে গোলাগুলি করেছে ডাকাত দল। এঘটনায় জড়িতরা এখনো কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। যেকোনো সময় আবার হামলার ঘটনা ঘটতে পারে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের মেঘনা ও শাখা নদীতে অবৈধ বালুমহাল পরিচালনা, নৌযানে চাঁদাবাজি করে আসছে নয়ন, পিয়াস, রিপন ও লালুবাহিনীর সদস্যরা। গত এক বছরে নদীতে কয়েক দফা গোলাগুলিতে খুন হন অন্য ডাকাত পক্ষের সরদার বাবলা। এক মাস আগে বালু উত্তোলনে বাধা দিতে গিয়ে গুলিতে নিহত হন আবদুল মান্নান ও হৃদয় আহমেদ নামের আরও দুজন। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত শুক্রবার জামালপুর গ্রামে একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প চালু করা হয়। ক্যাম্প চালু হওয়ার পর এলাকাবাসী মিষ্টি বিতরণ করেন। ক্যাম্প সরিয়ে নিতে শনিবার মানববন্ধন করেন ডাকাত পক্ষের লোকজন।

ঘটনার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বিকেল পাঁচটার পরপর পাঁচ-ছয়টি দ্রুতগতির ইঞ্জিনচালিত ট্রলার নিয়ে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প-সংলগ্ন মেঘনা নদীতে মহড়া শুরু করে নৌ-ডাকাত নয়ন, পিয়াস, রিপন ও আক্তার পক্ষের ৩০-৪০ জন। এ সময় ক্যাম্পের পুলিশ সদস্যরা ডাকাত দলের উপস্থিতি টের পেয়ে নদীতে অভিযানে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। পুলিশের প্রস্তুতির বিষয়টি আন্দাজ করতে পেরে ডাকাত দলের সদস্যরা চাঁদপুরের বেলতলীর দিকে চলে যায়।

তারা ক্যাম্প ও টহলে থাকা পুলিশকে লক্ষ্য করে একের পর এক ককটেল ও গুলি ছুড়তে থাকেন। আত্মরক্ষায় পুলিশ সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালান। এ সময় ডাকাতদের পক্ষ থেকে প্রায় ১শ ও পুলিশের পক্ষ থেকে ২০টির মতো গুলি ছোড়া হয়। আধাঘণ্টার বেশি সময় ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি চলে। একপর্যায়ে পুলিশের প্রতিরোধের মুখে পৌনে ছয়টার দিকে ট্রলার নিয়ে মতলবের দিকে চলে যায় হামলাকারীরা।

পুলিশের তৎপরতায় ডাকাত দলও তাদের কার্যক্রম চালাতে বাধার মুখে পড়ে। এ জন্য ডাকাতেরা ভয়ভীতি দেখিয়ে কিংবা হামলা করে এখান থেকে পুলিশ ক্যাম্প সরাতে চাচ্ছে।

মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফিরোজ কবির বলেন, যারা পুলিশের ওপর হামলার চেষ্টা করেছে তাদের আটকের চেষ্টা চলছে। হামলার ঘটনায় অস্ত্র ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন।

পুলিশ,গোলাগুলি,মামলা
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত