দীর্ঘদিন ধরে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের (রসিক) ১০ হাজার সড়ক বাতি অকেজো। ফলে মূল শহরে আলোর ঝলকানি থাকলেও আশেপাশের পাড়া ও মহল্লা অন্ধকারে নিমজ্জিত। এতে করে বাড়ছে চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা।
সরেজমিনে দেখা যায়, রসিক মূল শহরের চিত্রে জ্বলছে বাহারি রকমের সড়কবাতি।
তবে বিপরীত চিত্র বিভিন্ন পাড়া মহল্লায়। অধিকাংশ সড়ক বাতি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দীর্ঘ সময় ধরে অন্ধকারে নিমজ্জিত। এমন অবস্থা নগরীর তেত্রিশটি ওয়ার্ডের অধিকাংশ এলাকায় দেখা যাচ্ছে।
নগরবাসিদের অভিযোগ, সড়ক বাতি নষ্ট থাকার সুযোগে বাড়ছে চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা। নগরীর মুলাটোল এলাকার বাসিন্দা সেলিম সরকার বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে সড়কের বাতি নষ্ট, কোন জায়গায় আবার লাইট নেই। রাস্তা দিয়ে চলাচলে ভীতিকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে। নিরাপত্তার ভয় আছে, আবার ভাঙা রাস্তা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছি। এখন নতুন করে টোকাইদের ভয়ে থাকতে হয়। হাত থেকে বাজারে ব্যাগ, মোবাইল টেনে হিছড়ে নিয়ে যায়।’
সিটি কর্পোরেশনের ৩৩ নং ওয়ার্ডের আরেক বাসিন্দা চপল মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিন লাইটবিহীন রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করি। এতবার বলার পরেও কেউ বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছে না। তার উপর বেশ কিছু রাস্তায় খানা-খন্দে ভরা। সবকিছু মিলে খুব ভয় কাজ করে। এই লাইটগুলো মেরামত করে দিলে আমাদের খুব উপকার হবে।’
রসিক জানিয়েছে নতুন সড়ক বাতি কিনতে টেন্ডার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। সিটি করপোরেশনের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক জায়গায় লাইট সমস্যা দেখা দিয়েছে। স্টোরের মালামাল শেষ হওয়ায় এই লাইটগুলো মেরামত হচ্ছে না। তবে দ্রুত একটি টেন্ডারে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অলরেডি কার্যত আদেশ দেওয়া হয়েছে। সামনের মাসের মধ্যে মালামাল পেলে বাকি অকেজো লাইটগুলো মেরামত করার সুযোগ পাব। নতুন সড়ক বাতি কিনতে টেন্ডার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।’
উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) মারুফ আহমেদ বলেন, ‘শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে টহল টিম প্রতিনিয়ত ডিউটি করে। পাশাপাশি শহরব্যাপী পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা ও সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা থাকলে এগুলো আমাদের সহায়ক ভূমিকা পালন করে। যথাযথ আলোর ব্যবস্থা থাকলে অপরাধীরা সেখানে অপরাধ করতে ভয় পায়। কিন্তু জায়গাটি যদি অন্ধকারে আচ্ছন্ন থাকে, সেখানে পর্যাপ্ত আলো ও সিসি ক্যামেরা না থাকলে অপরাধীরা সাহস পেয়ে অপরাধ করে।’
নগরজুড়ে থাকা ২০ হাজার সড়কবাতির অর্ধেকই অকেজো। রসিক অধিকাংশ এলাকায় সড়কবাতি অকেজো থাকায় বেড়েছে দুর্ঘটনা, চুরি ও ছিনতাই। তাই দ্রুত জনসাধারণের নিরাপত্তায় সড়কবাতি মেরামতের ব্যবস্থা নেবে কর্তৃপক্ষ, এমনটাই প্রত্যাশা করছেন নগরবাসী।
রসিকের সাবেক একটিং মেয়র মাহবুবার রহমান মন্জু জানান, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় সড়কবাতির অর্ধেকই অকেজো হয়ে পড়েছে। মেরামত করার কোনো উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, যে সব কর্মকর্তা দায়িত্বে ছিলেন, তারাও বদলি হয়েছেন। নতুন প্রশাসক এসে রসিকের জন্য কিছু ব্যবস্থা করবেন, এটাই আশা করেন তিনি।
