ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

দুধের আমদানি কমাতে সারা দেশে হবে চিলিং পয়েন্ট: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

দুধের আমদানি কমাতে সারা দেশে হবে চিলিং পয়েন্ট: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, দুধের আমদানি কমাতে সারা দেশে চিলিং পয়েন্ট (শীতলীকরণ কেন্দ্র) স্থাপন করা হবে। উৎপাদিত দুধের ঘাটতি মেটাতে এবং যথাযথ সংগ্রহ ও সংরক্ষণের অভাবে খামারিরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে লক্ষ্যে এসব পয়েন্ট দেশব্যাপী স্থাপন করা হবে। এছাড়া দেশের বড়ো বড়ো কোম্পানির নির্ভরশীলতা কমিয়ে খামারিদের উৎপাদিত দুধ সংগ্রহ করে শহরে আনার ব্যবস্থা করা হবে।

রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে আর ডি আর এস বেগম রোকেয়া হলে অনুষ্ঠিত প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি)-এর রংপুর বিভাগীয় কার্যক্রম অগ্রগতি পর্যালোচনা শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, গবাদিপশু পালনের ক্ষেত্রে রোগ নিয়ন্ত্রণ একটি বড় চ্যালেঞ্জ। প্রতিরোধযোগ্য রোগ নিয়ন্ত্রণে টিকার কোনো বিকল্প নেই। পশুর রোগ প্রতিরোধে ভ্যাকসিন উৎপাদন ও ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এটি খামারিদের জীবন-জীবিকার সাথে জড়িত ও জনস্বাস্থ্যের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি আরও বলেন, মানুষের নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে প্রাণীর অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। চরাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, চরাঞ্চলের নারীদের জীবন-জীবিকা গবাদি পশু পালনের সাথে গভীরভাবে জড়িত। এজন্য চরাঞ্চালের উন্নয়নে প্রাণিসম্পদ খাতে বিশেষ নজর দিতে হবে।

বাংলাদেশের বেশিরভাগ শিশু পুষ্টিহীনতায় ভুগছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্কুলে শিশুদের মিড ডে মিল হিসেবে দুধের পাশাপাশি ডিমও দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তিনি ওষুধের মেয়াদ যাচাই করে তা বিতরণ করতে উপস্থিত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের বলেন, উদ্যোক্তাদের উদ্ভাবনে উৎসাহিত করার পাশাপাশি তাদের তৈরি উপকরণ অন্যান্য খামারিদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। প্রশিক্ষিত খামারিদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে তাদের দিয়ে নতুন উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, রংপুর বিভাগের উৎপাদিত অতিরিক্ত দুধ প্রক্রিয়াজাতকরণ করে সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে দুধের ঘাটতি কিছুটা হ্রাস পাবে। এছাড়া পিজির সদস্যদের সঞ্চিত অর্থ উৎপাদনশীল কাজে লাগাতে তিনি সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান বলেন, নতুনভাবে ছড়িয়ে পড়া ল্যাম্পি স্কিন রোগ প্রতিরোধে দেশীয়ভাবে ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আড়াই লক্ষ ডোজ বিতরণ করা হয়েছে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে পাঁচ লক্ষ ডোজ প্রস্তুত করা হবে।

তিনি আরো বলেন, জরুরি ভিত্তিতে সরকার বিদেশ থেকে ১২ লক্ষ ডোজ আমদানি করছে যা, রংপুরসহ সমগ্রদেশে পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হবে। সবার সহযোগিতায় মাঠপর্যায়ে খামারিদের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এলডিডিপি-এর প্রকল্পের চীফ টেকনিক্যাল কো-অর্ডিনেটর ড. মো. গোলাম রব্বানী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে এলডিডিপি-এর প্রকল্প পরিচালক ডা. মো. জসিম উদ্দিন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রংপুর বিভাগের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের জেলা-উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, পিজি খামারিগণ ও সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

দুধ,আমদানি,প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত