ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সাটুরিয়ায় খালের মুখ ভরাট, কৃষকদের মানববন্ধন-বিক্ষোভ

সাটুরিয়ায় খালের মুখ ভরাট, কৃষকদের মানববন্ধন-বিক্ষোভ

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় একটি সেতুর পাশে পানি নিষ্কাশনের একমাত্র খাল মাটি দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে ভুক্তভোগী কৃষক ও স্থানীয় এলাকাবাসী।

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার হরগজ বাজারের চৌরাস্তা থেকে প্রথমে বিক্ষোভ শুরু হয়ে বাজারের প্রধান প্রধাস গলি প্রদক্ষিণ করে পূর্বের স্থানে এসে শেষ হয়। পরে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।

মানববন্ধনে কাজী শহিদুল্লাহর নেতৃত্বে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় বাসিন্দা বেলাল হোসেন, কৃষক সাইদুর রহমান, দেলোয়ার হোসেন ও আবদুল কাদের। তারা অভিযোগ করে বলেন, হরগজ মোড় হতে হরগজ বাজার সড়কের বালুর চর নামক স্থানে অবস্থিত একটি সেতুর উত্তর পাশে দীর্ঘদিন ধরে পানি নিষ্কাশনের একটি মাত্র খাল ছিল যা দীর্ঘদিন যাবত স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু ৫ আগস্টের পর হঠাৎ করে রাতের আঁধারে ওই পানি নিষ্কাশনের পথটি মাটি দিয়ে ভরাট করে দেওয়া হয়।

কাজী শহিদুল্লাহ বলেন, স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী আনোয়ার, ফরিদ ও আলতাফ এই মাটি ভরাটে সরাসরি জড়িত রয়েছে। এতে করে সড়কের দুই পাশের বিস্তীর্ণ কৃষিজমিতে পানি আটকে আছে। উত্তর ও দক্ষিণ পাশে হাজার হাজার একর জমিতে পানি জমে গিয়ে ফসল নষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে ধান ও সবজি চাষে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা।

তিনি আরো বলেন, এই বালু চরের ফসলি জমির পানি খালে যেতো পরে তা ধলেশ্বরী নদীতে গিয়ে পড়ত। তা এখন যেতে পারছে না। মাটি ভরাটের কারণে অল্প বৃষ্টির ফলে ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক সাইদুর রহমান বলেন, পানি নিষ্কাশন পথ বন্ধ হওয়ায় আমার জমির পানি বের হতে পারছে না। মাঠে পানি জমে ধান নষ্ট হয়ে গেছে। সামনে শীতকাল, এখনই ব্যবস্থা না নিলে রবিশস্যও চাষ করা সম্ভব হবে না। ইতোমধ্যে আমার প্রায় ৫ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই বালু চরের শত শত কৃষকের চাষকৃত ভুট্টা, ধান ও বিভিন্ন সবজি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

বেলাল হোসেন বলেন, ব্রিজের উত্তর পাশে হানিফ আলী, ঝর্ণা বেগমসহ কয়েকজন জমি কিনে। কিন্তু তাদের কেনার চাইতে বেশী বাড়তি পানি নিষ্কাশনের যে পথ ছিল তা রাতের আধারে মাটি ভরাট করে ফেলেছে। রাস্তার দুই ধারে হাজার হাজর এক জমির পানি বের হতে পারছে না। চলতি মৌসুমে সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, এ ক্ষতি বিষয়ে আমরা হরগজ ভূমি সহকারী, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর কার্যালয়ে গণ সাক্ষর করে লিখিত অভিযোগ করেছি। হরগজ এলাকার ঐ চিহ্নিত মহল আনোয়ার, ফরিদ ও আলতাফের সহযোগিতায় প্রশাসনও কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। যা খুবই রহস্যজনক বলে মনে হচ্ছে।

দ্রুত সময়ের মধ্য পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। মানববন্ধনে স্থানীয় কৃষকরা বলেন, সংশ্লিষ্ট প্রশাসন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তবে তারা উপজেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসক এর কার্যালয় ঘেরাওসহ আরও বড় কর্মসূচি দেবেন।

এ বিষয়ে হানিফ আলী ও ঝর্ণা বেগম এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমরা আমাদের কেনা জমিতেই মাটি ভরাট করেছি।

অভিযুক্ত ফরিদ হোসেনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার জন্য চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইকবাল হোসেন বলেন, এ বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ আমি হাতে পাইনি তবে আমি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তদন্ত করে দেখব। অভিযোগের সত্যতা পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পানি নিষ্কাশন,ভরাট,কৃষক,বিক্ষোভ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত