ঢাকা সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

চুয়াডাঙ্গায় আপন দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা, আহত ১

চুয়াডাঙ্গায় আপন দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা, আহত ১

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার উথলী গ্রামে পূর্ব শত্রুতা ও রাজনৈতিক কোন্দলের জেরে প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আপন দুই ভাই নিহত হয়েছেন।

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল আনুমানিক ৮টার দিকে কৃষিকাজ করার সময় তাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন উথলী গ্রামের বড় মসজিদ পাড়ার বাসিন্দা মিন্টা মিয়া (৬০) ও তার ছোট ভাই হামজা আলী (৪৫)। তারা উভয়েই মৃত ক্ষুদে মন্ডলের ছেলে। এই ঘটনায় তাদের আরেক ভাই রাজ্জাক গুরুতর আহত হয়েছেন।

নিহতদের স্বজনদের অভিযোগ, শনিবার সকাল আনুমানিক ৮টার দিকে মিন্টা, হামজা ও রাজ্জাক তিন ভাই গ্রামের ৭২ নং ব্রিজের কাছে কৃষি কাজ করছিলেন। এ সময় যুবদল ও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ৮ থেকে ১০ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীরা ধারালো অস্ত্র যেমন দা এবং হাসুয়া, দিয়ে দুই ভাইকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। একই সময়ে হামলাকারীদের আক্রমণে রাজ্জাকও আহত হন।

স্থানীয় লোকজন রক্তাক্ত আনোয়ার হোসেন মিন্টা ও হামজার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে সেখানে তাদের মৃত্যু হয়। অপর আহত রাজ্জাককে জীবননগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে এবং তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

নিহতদের স্বজনরা জানান, দুই পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। প্রায় চার মাস আগে গরু কেনাবেচা নিয়ে তাদের মধ্যে একটি বিবাদ শুরু হয়। এই বিরোধ মীমাংসার জন্য স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিশ বৈঠক হলেও কোনো সমাধান হয়নি। পরে দুই পক্ষই জীবননগর থানায় একে অপরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে, যা এখনো চলমান।

নিহতদের স্বজন রমজান জানান, বিরোধের জেরে কয়েক মাস আগে হামলাকারীরা মিন্টা ও তার পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়েছিল। তখন তারা যশোর থেকে চিকিৎসা নিয়ে ফিরেছিলেন। কিন্তু আজকের এই হামলা ছিল পূর্বপরিকল্পিত।

নিহতদের দুলাভাই ইসলামের অভিযোগ, তাদের তিন শ্যালকের ওপর হামলাকারী স্থানীয় নিজাম, বিপুল, স্বপন, তুতা, জুয়েল, হিমেল, সাইফুলসহ তাদের দলবল। তিনি আরও উল্লেখ করেন, হামলাকারীদের মধ্যে স্বপন ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি।

নিহতদের পরিবারের দাবি, তাদের রাজনৈতিক পরিচয়ই এই হামলার মূল কারণ। তারা আওয়ামী লীগকে সমর্থন করতেন এবং এটাই তাদের 'অপরাধ' ছিল।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ইএমও ওয়াহিদ আহমেদ রবিন জানান, সকাল ১০টার দিকে হাসপাতালে আনার পর তারা হামজাকে মৃত অবস্থায় পান। মিন্টাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হলেও ১০টা ৫০ মিনিটে তারও মৃত্যু হয়।

জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মামুন হোসেন বিশ্বাস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশ হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করতে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এই ঘটনার পর থেকে উথলী গ্রামে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

ভাই,কুপিয়ে হত্যা,আহত
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত