ঢাকা সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ফেনীতে পতিত জমিতে বাড়ছে পেয়ারা চাষ

ফেনীতে পতিত জমিতে বাড়ছে পেয়ারা চাষ

ফেনীর বিভিন্ন স্থানে পরিত্যক্ত ও পতিত ভূমিতে পেয়ারা চাষে সাফল্য এসেছে। জেলায় পেয়ারা চাষ করে ইতোমধ্যে কয়েকজন উদ্যোক্তা সফল হওয়ায়, তাদের দেখাদেখি আরও অনেকেই এগিয়ে এসেছেন। ফেনীতে উৎপাদিত বারোমাসি এ ফলের স্বাদ ও পুষ্টিগুণ ভালো থাকায়, কৃষি বিভাগ বাগান সৃষ্টি করতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে আসছে।

চলতি মৌসুমে জেলায় ১৮০ হেক্টর ভূমিতে পেয়ারা চাষ হয়েছে; যা থেকে অন্তত ২ হাজার টন ফল পাওয়া যাবে। যার বাজারমূল্য অন্তত ৮ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

জানা গেছে, এক সময় ফেনীতে শখ করেই পেয়ারার আবাদ করা হতো। ঘরের আঙিনা ও আশপাশের খালি জায়গায় শোভা পেত পেয়ারা গাছ। কিন্তু সেই পেয়ারাই এখন ফেনীর উদ্যোক্তাদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে উঠেছে। এখন শুধু বাড়ির আঙিনা নয়, ফেনীর বিভিন্ন স্থানে বিস্তীর্ণ পতিত জমিতে বাণিজ্যিকভাবে লাগানো হয়েছে পেয়ারা গাছ। এসব পেয়ারা হাত বদল হয়ে জেলার চাহিদা পূরণ করে আশপাশের জেলায়ও চলে যাচ্ছে।

কৃষি বিভাগ জানায়, ২০১৫ সালের দিকে ফেনীতে কয়েকজন উদ্যোক্তা স্বল্প পরিসরে পেয়ারার আবাদ শুরু করেন। এতে ভালো ফলন পাওয়ায় ক্রমান্বয়ে বাণিজ্যিক আবাদ বাড়তে থাকে। ২০২০ সালে জেলায় ১১৭ হেক্টর জমিতে পেয়ারার আবাদ হয়, যেখানে ফলন হয়েছিল ১৩০০ টন।

পেয়ারার পুষ্টিগুণ, স্বাদ ও ফলন ভালো হওয়ায় চলতি মৌসুমে আবাদ হয়েছে ১৮০ হেক্টরে, যা থেকে অন্তত ২ হাজার টন ফলন আশা করা যাচ্ছে।

সম্প্রতি ফেনী সদর উপজেলার কালিদহ ইউনিয়নের পাহালিয়া অ্যাগ্রো পেয়ারা বাগানে গিয়ে দেখা যায়, সাত একর জায়গায় পেয়ারার বাগান করা হয়েছে। এখানে ৩ হাজার ২০০ গাছের থোকায় থোকায় পেয়ারা শোভা পাচ্ছে। মালিক ও কর্মচারীরা গাছের পরিচর্যা ও ফল তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

বাগানের পরিচালক ফরিদ উদ্দিন মাসুদ বলেন, “কয়েক বছর আগে কালিদহ পাহালিয়া নদীর তীরে পতিত জায়গায় আমরা আটজন উদ্যোক্তা যৌথভাবে সমন্বিত বাগান গড়ে তুলেছি। এ বাগানে ৩ হাজারের অধিক পেয়ারা গাছ রয়েছে। ২০২১ সালে কৃষি বিভাগের পরামর্শে ভালো ফলন পেয়েছি। বাগানে বারি ৩, বাউ ৩ ও ৫ এবং থাই জাতের পেয়ারা সবচেয়ে ভালো ফলন দেয়। প্রতিটি গাছ বারো মাসে ফলন দেয় এবং বছরে প্রতি গাছ থেকে ২ থেকে আড়াই হাজার টাকার পেয়ারা পাওয়া যায়।”

স্থানীয় বাসিন্দা মাস্টার সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, “এই বাগানে উৎপাদিত পেয়ারা বেশ সুস্বাদু। বাজারে চাহিদা ব্যাপক।”

ফেনী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন বলেন, “পেয়ারার জন্য বেলে ও দোআঁশ মাটি সবচেয়ে উপযোগী। ফেনীর বিভিন্ন পতিত স্থানে এই মাটি থাকায় স্থানীয়রা বারোমাসি পেয়ারা চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন। কৃষি বিভাগ থেকে আমরা উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে আসছি।”

পেয়ারা চাষ,পতিত জমি,ফেনী
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত