ঢাকা রোববার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

প্রবাসীর স্ত্রীর পরকীয়ার ঘটনায় আদালত চত্বরে ধস্তাধস্তি

প্রবাসীর স্ত্রীর পরকীয়ার ঘটনায় আদালত চত্বরে ধস্তাধস্তি

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নে প্রবাসীর স্ত্রী তামান্না খাতুনের (২২) পরকীয়ার সম্পর্ককে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও আইনি জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা জেলা দায়রা জজ আদালত চত্বরে এ ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বেগমপুর গ্রামের রুহুল আমীনের মেয়ে তামান্না খাতুনের সঙ্গে তিতুদহ ইউনিয়নের ছোট শলুয়া গ্রামের হামিদের ছেলে মাসুমের (২৫) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় চার মাস আগে বিষয়টি ধরা পড়লে এলাকাবাসী তাদের বিয়ে দিয়ে দেন।

এর আগে, সাত বছর পূর্বে ছোট শলুয়া গ্রামের নশকর আলীর ছেলে মালয়েশিয়া প্রবাসী সুজন আলীর (২৫) সাথে তামান্না খাতুনের প্রথম বিয়ে হয়। তাদের দুই সন্তান, ছেলে মাহিম আলী (৫) ও মেয়ে সারা মনি (৩) রয়েছে। দুই বছর আগে কাজের সন্ধানে মালয়েশিয়া যান সুজন আলী।

তার অনুপস্থিতিতেই তামান্না খাতুনের সঙ্গে মাসুমের পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে অভিযোগ রয়েছে।

বিষয়টি জানাজানি হলে গ্রামের সালিশে তামান্নার সঙ্গে মাসুমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তামান্না নিজের দুই সন্তানকে ফেরত চেয়ে প্রাক্তন স্বামীর পরিবারের কাছে দাবি জানান। কিন্তু সুজন আলীর পরিবার সন্তান দিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে সন্তানদের হেফাজতের দাবিতে তামান্না আদালতে মামলা দায়ের করেন।

আজ সোমবার সেই মামলার হাজিরা দিতে চুয়াডাঙ্গা জেলা আদালতে আসেন সুজন আলীর পরিবারের সদস্যরা। হাজিরা শেষে আদালত চত্বরে বের হওয়ার সময় তামান্নার পরিবারের লোকজন হামলা চালিয়ে শিশু দুটিকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ করেন সুজন আলীর মা আর্জিনা বেগম।

তিনি জানান, “প্রায় চার মাস আগে আমার ছেলের বউ তামান্না পাশের বাড়ির মাসুমের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে ধরা পড়ে। পরে ছেলেটি তাকে তালাক দেয়, আর গ্রামবাসী সেই রাতেই মাসুমের সঙ্গে তামান্নার বিয়ে দেয়। তারা এখন সংসার করছে। কিন্তু কয়েক মাস আগে হঠাৎ তামান্না আমার দুই নাতি-নাতনিকে ফেরত চায়। আমরা না বলায় সে আদালতে মামলা করে। আজ হাজিরা দিতে গেলে আদালত প্রাঙ্গণে তামান্নার বাবা রুহুল আমীন, মা তহমিনা ও ভাই ডালিম আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে শিশু দুটিকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। আমাকে তারা বাঁশ ও ঘুষি মেরে রক্তাক্ত করে।”

এ ঘটনায় আদালত প্রাঙ্গণে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে আদালত পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পর উভয় পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খালেদুর রহমান বলেন, “দুই পরিবারের ধস্তাধস্তির ঘটনা কোর্ট চত্বরে ঘটেছে। এরপর আমরা দুই পরিবারের দুইজনকে সাময়িকভাবে আটক রেখেছি। দুই পরিবারের এ মামলা কোর্টে বিচার প্রক্রিয়াধীন আছে। শিশুকে পরবর্তী ধার্য তারিখ পর্যন্ত কোর্টের অর্ডারে মায়ের জিম্মায় রাখা হয়েছে। কোর্ট চত্বরে যে ধস্তাধস্তি হয়েছে, এটা কোর্ট অবমাননার শামিল। তাই আমরা দুই পরিবারের দুইজনকে এ ঘটনায় আটক রেখেছি।”

আদালত চত্বরে ধস্তাধস্তি,প্রবাসীর স্ত্রীর পরকীয়া
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত