
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনের বিএনপি প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বলেছেন, আমার নেতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের ডাক দিয়েছিলেন। আমি সেই দল করি। শহীদ জিয়া সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। শহীদ জিয়া ব্রিগেড কমান্ডার ছিলেন। শহীদ জিয়া রাষ্ট্রপতি ছিলেন। সেই শহীদ জিয়া বিএনপি গড়েছেন। আমি যে দলটা করি সেটা হলো মুক্তিযোদ্ধার দল।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইটনা উপজেলার রায়টুটী ইউনিয়নের রাজী ঈদগাহ মাঠে ইউনিয়ন বিএনপি ও সকল অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমি নাকি সত্যিকারের মুসলমান না, ধর্মকে নাকি গালাগাল করি। আমি আপনাদের হাতজোড় করে বলি, আমি এই পৃথিবীতে যেদিন জন্মগ্রহণ করেছি যেহেতু মুসলমানের ঘরে জন্মগ্রহণ করেছি সেহেতু আমি মুসলমান। যেদিন আমার বয়স ৫ বছর হইছে সেদিন আমার বাবা মসজিদ এবং মাদ্রাসায় ভর্তি করেছেন স্কুলে যাওয়ার আগে। অ, আ পড়ার আগে আমি প্রথম পড়েছি আলিফ, বা, তা, ছা। আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ কবিতা ইয়া নবী সালাম আলাইকা। ধর্মের ইস্যুতে যারা আমার বিরুদ্ধে কথা বলে তারা হলো মিথ্যাবাদী, বেইমান, বিশ্বাসঘাতক, রাজাকার, স্বাধীনতাবিরোধী।
জামায়াত তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে উল্লেখ করে ফজলুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামীর সাথে আমার বিরোধ ছিল না। কিন্তু ৫ই আগস্টের পরে জামায়াতে ইসলামী বলছে, আমরা কি শুধু গণতন্ত্রের জন্য হাসিনাকে যুদ্ধ কইরা নামাইছি নির্বাচনের জন্য। আমরা নতুনভাবে রাষ্ট্র করব। ঠিক তখনই জামায়াতে ইসলামী বলছে, ৪৭ হলো স্বাধীনতা আর ২৪ হলো স্বাধীনতা। ৭১ হলো গণ্ডগোল, ৭১ কিছু না। এইডা ইন্ডিয়ার হিন্দুরা গণ্ডগোল লাগাইছে। এইডা কোনো মুক্তিযুদ্ধ না। দুই দিন তিন দিন সহ্য করছি। আমি জামায়াত শিবিরের বিরুদ্ধে। যারা বলে যুদ্ধ হয় নাই। বাংলাদেশ মানি না। যারা পাকিস্তান থেকে মন্ত্রী আসলে মনে করে বড় জ্যাঠা আইছে, আমি তো তাদের বিরুদ্ধে। এই দেশ বাংলাদেশ থাকবে। এইখানে আমার যুদ্ধটা।
ফজলুর রহমান বলেন, মুক্তিযুদ্ধ খারাপ হবে কেনো? মুক্তিযুদ্ধ তো কোনো দোষ করেনি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলাম। ৩০ লাখ মানুষ মারা গেলো। ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জত দিলো। আমার সোনার বাংলা পুড়ে ছারখার হলো। এক কোটি মানুষ ইন্ডিয়াতে নির্বাসনে গেলো। আমার মতো ২৩ বছরের ফজলুর রহমান বাংকারে থেকে থেকে যুদ্ধ করলাম। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস আষাঢ়-শ্রাবণের বৃষ্টির রাতে স্বপ্ন দেখতাম—দেশ যখন স্বাধীন হবে, পাঞ্জাবি চলে যাবে। বাংলার পূর্বাকাশে ঝলমল করে স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য উঠবে। সেই দেশে স্বাধীন দেশে বাঙালিরা আমরা বাস করতে পারবো। এরা যদি বলে কোনো যুদ্ধ হয় নাই সেটা এ দেশের মানুষ মানতে পারে না।
রায়টুটী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এলিম হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মী সভায় জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম রেখা, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম রতন, ইটনা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এস এম কামাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুজ্জামান ঠাকুর স্বপন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মনির হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পলাশ রহমান ও সোমেশ কুমার গোপ, সাংগঠনিক সম্পাদক তরিকুল ইসলাম জুয়েল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।