
রংপুরে ‘প্রিপেইড মিটার লাগানো’র সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে বিদ্যুৎ গ্রাহক ফোরাম।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় বিদ্যুৎ গ্রাহক ফোরাম রংপুর-এর উদ্যোগে প্রি-পেইড মিটার বাতিলের দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনের নিউক্রস রোডস্থ অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের আহ্বায়ক অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন।
উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা আনোয়ার হোসেন বাবলু, মির্জা বাবর বাবুল, সদস্যসচিব আহসানুল আরেফিন তিতু, যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান সোহেলসহ নেতৃবৃন্দ।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে নেতৃবৃন্দ বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের বন্দুকের সামনে বুক পেতে দিয়ে রংপুরের আবু সাঈদসহ সারাদেশে দেড় সহস্রাধিক ছাত্রজনতা শহীদ হয়েছেন। হাজার হাজার যুবক তরুণ রক্ত ঝরিয়ে আহত হয়েছেন, অনেকে চোখ বা অন্য অঙ্গ হারিয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। এখনো অনেকে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন। সেই শহীদ এবং আহতদের রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি। আর সেই ফ্যাসিস্ট সরকারের সীমাহীন লুটপাটের প্রকল্প কিভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাস্তবায়ন করতে নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে?
তারা বলেন, আপনারা জানেন সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের 'ভাই-বন্ধু' চক্রকে ১৫ লক্ষ মিটার সরবরাহের কাজ দিতে সক্রিয় নেসকো (৮ লক্ষ মিটার) ও ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (৭ লক্ষ মিটার)। তাই তারা দরপত্রে এমনভাবে শর্ত দিয়েছে, যাতে এই কোম্পানিগুলোই কাজ পায়। আওয়ামী লীগ আমলে এই কোম্পানিগুলোই প্রিপেইড মিটার সাপ্লাই করেছে। দরপত্র দলিলের শর্ত- সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে গত পাঁচ বছরে সমজাতীয় মিটার স্থাপনে দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নের সনদ থাকতে হবে। ন্যূনতম ৫০ হাজার স্মার্ট প্রিপেইড মিটার পাওয়ার লাইন কমিউনিকেশন স্থাপনের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এই শর্ত পূরণ করতে পারবে শুধুমাত্র সেই চারটি কোম্পানি যারা ফ্যাসিস্ট সরকারের ছত্রছায়ায় লুটপাট চালিয়েছে। এসব কারণে প্রিপেইড মিটার বাতিলের দাবিতে আমরা ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করেছি। আমাদের আন্দোলনের মুখে জেলা প্রশাসকের মধ্যস্থতায় নেসকো এই মিটার লাগানো কিছুদিন বন্ধ রেখেছিল।
তারা আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে তারা (নেসকো) কৌশল পাল্টিয়েছে। আগের ডিজিটাল মিটারে ভুতুড়ে বিল দিচ্ছে। নানা রকম হয়রানি করছে। ভোক্তা মিটার সংক্রান্ত কোনো সমস্যা নিয়ে বিদ্যুৎ অফিসে গেলে তাদেরকে বুঝানোর চেষ্টা করছে প্রিপেইড মিটার লাগালে সব সমস্যার সমাধান হবে। আবার বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে বলছে সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী বাধ্যতামূলক প্রিপেইড মিটার লাগাতে হবে। এভাবে প্রতারণাপূর্বক তারা বেশকিছু প্রিপেইড মিটার লাগিয়েছে। অনেক গ্রাহক আবার পরে বুঝতে পেয়ে মিটার খুলতে অফিসকে বাধ্য করেছে।
আমাদের আন্দোলনের ফলে জনগণের মধ্যে যে সচেতনতা গড়ে উঠেছে তাতে বিভিন্ন এলাকায় নেসকো বাধার মুখে পড়ছে। কিন্তু যারা ভালোভাবে জানে না তাদের অজ্ঞতার সুযোগ নিচ্ছে নেসকো। আমরা এই প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধের জোর দাবি জানাই।
এই দাবিতে আগামী ৩ ডিসেম্বর কাচারী বাজারে বিক্ষোভ সমাবেশ ও স্মারকলিপি পেশের কর্মসূচি পালন করবে বিদ্যুৎ গ্রাহক ফোরাম রংপুর। এ কর্মসূচিতে সর্বস্তরের জনগণকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান সংগঠনটির নেতারা।