
জুলাই বিপ্লবের অন্যতম নেতা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরীফ ওসমান বিন হাদীর নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আধিপত্যবাদ বিরোধী শিক্ষক ঐক্য।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে ‘আধিপত্যবাদ-বিরোধী শিক্ষক ঐক্য’-এর ব্যানারে এ মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং এন্ড ইনসুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সমন্বয়কারী ও মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. ফুয়াদ হাসান।
মানববন্ধনে ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. নেসারুল করিম বলেন, জুলাই বিপ্লবের যোদ্ধা ওসমান হাদীকে হত্যার মাধ্যমে বিপ্লবের চেতনা দমিয়ে রাখা যাবে না। কেউ যদি মনে করে জুলাই বিপ্লবের স্পিরিটকে দমিয়ে রাখতে পারবে, তাদের চিন্তাভাবনা ভুল। তারা একজন হাদীকে হত্যা করে বাংলায় লক্ষ হাদীর জন্ম দিয়েছে।
ওসমান হাদীকে সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের প্রতিবাদ ও দেশীয় সংস্কৃতির ঐক্যের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করে নেসারুল করিম আরো বলেন, চলমান সরকারে যারা দায়িত্ব পালন করছেন, আপনাদের অনেকেই পতিত সরকারকে পুনর্বাসন করার জন্য হাদীদের সহ্য করতে পারছেন না। আপনাদের বলতে চাই, আপনারা বাংলার মানুষের স্বপ্নকে ধারণ করে সকল নির্যাতন ও নিষ্পেষণের বিচার করুন। গণমানুষের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে শিখুন।
এ সময় ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের পরিণতি যেন হায়দরাবাদ, ফিলিস্তিন ও সিকিমের মতো না হয়, সে জন্য সব ধরনের আধিপত্যবাদী শক্তির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
শরীফ ওসমান হাদির হত্যার বিচারের দাবি জানিয়ে অধ্যাপক জামাল উদ্দিন আরো বলেন, আমরা যদি আধিপত্যবাদ-বিরোধী শক্তির ঐক্যের প্রতীক শরীফ ওসমান হাদির হত্যার বিচার না পাই, তাহলে লাখ লাখ মানুষ জানাজায় গিয়ে লাভ নেই। আমাদের ওসমান হাদী হত্যার বিচার নিশ্চিত করতেই হবে।
মানববন্ধন থেকে ৪ দফা দাবি ঘোষণা করেন ব্যাংকিং এন্ড ইনসুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ। সেগুলো হলো— শহীদ শরীফ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে; শুধুমাত্র প্রত্যক্ষ হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার এবং বিচার করলেই হবে না; এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে যে সকল মাস্টারমাইন্ড রাজনীতিবিদ অথবা অন্য কুশীলব জড়িত বা ষড়যন্ত্র করেছে বলে প্রতীয়মান হয়, তাদেরকেও জাতির সামনে উপস্থাপন করতে হবে;
হাদির মতো দ্বিতীয় আর কাউকে যেন জীবন দিতে না হয়, সেজন্য দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে হবে। যে সকল ষড়যন্ত্রকারী ও ফ্যাসিস্ট দোসর এখনো দেশের অভ্যন্তরে থেকে ষড়যন্ত্র করে বেড়াচ্ছে, তাদেরকে আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে; অধিকন্তু, স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও পূরণ না হওয়া যে আকাঙ্ক্ষা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর অর্পিত হয়েছে, বাংলাদেশে বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি ছিল, সেটির চির কবর দিয়ে ইনসাফের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
এ সময় আরো বক্তব্য দেন ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহাদাত হোছাইন, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মো. মোজাম্মেল হক, মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সেক্রেটারি সালেহ নোমান, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ড. শহীদুল হক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. এনায়েত উল্লাহ পাটওয়ারী।