ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

জুলাই গণহত্যা

জাতিসংঘের প্রতিবেদনকে ‘ঐতিহাসিক দলিল’ ঘোষণার নির্দেশ

জাতিসংঘের প্রতিবেদনকে ‘ঐতিহাসিক দলিল’ ঘোষণার নির্দেশ

চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক দপ্তরের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং প্রতিবেদনকে ‘ঐতিহাসিক দলিল’ হিসেবে ঘোষণা করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

একই সঙ্গে আদালত আগামী তিন মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরকে এটি গেজেট (পরিপত্র) আকারে প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে এ বিষয়ে অবগত হতে পারে, সেজন্য প্রতিবেদনটি যথাযথভাবে সংরক্ষণের নির্দেশও দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) এ-সংক্রান্ত রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই নির্দেশনা দিয়ে রায় ঘোষণা করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে নিজেই শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান ও তানিম খান এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।

এর আগে, গণহত্যাকারী ও স্বৈরশাসকদের টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে নির্দেশনা চেয়ে গত বছরের ১৩ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করেন। রিটের প্রেক্ষিতে আদালত জানতে চান— কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সাধারণ জনগণের হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ বিচার কেন দেওয়া হবে না, সে মর্মে রুল জারি করা হয়।

পরবর্তীতে, ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর বিশ্লেষণ এবং গুরুতর আহত বহু বিক্ষোভকারীর সঙ্গে কথা বলে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন তৈরি করে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) তথ্যানুসন্ধান দল। এই প্রতিবেদনটি ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। পরে, জাতিসংঘের প্রতিবেদনটি সংযুক্ত করে রিটকারী চলতি বছরের মে মাসে একটি সম্পূরক আবেদন দাখিল করেন আদালতে।

আদেশের পর আইনজীবী তানভীর আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান, দোষীদের বিচার নিয়ে আগস্টে রিট করি। তখন আদালত রুল ইস্যু করেন। সে অনুযায়ী সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। ট্রাইব্যুনালকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। আইন সংশোধন করা হয়েছে। তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন টিম কাজ করছে। এর মধ্যে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। রিপোর্টে ১৪০০ মানুষকে খুন করার কথা বলা হয়েছে। তখনকার রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, কীভাবে সহিংসতা চালানো হয়েছে, বিচার ব্যবস্থা কেমন ছিল, অর্থাৎ একটি যথাযথ পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দৃষ্টিতে তিনটি উদ্দেশ্যে এটিকে সংরক্ষণ করা উচিত। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জানার জন্য, কী ঘটনা ঘটেছিল। এভিডেন্স হিসেবে সংরক্ষণ করার জন্য। যদিও এরই মধ্যে ট্রাইব্যুনাল এটিকে নিয়েছেন বলে জেনেছি। ভবিষ্যতে রিসার্চের উদ্দেশ্যে অন্য দেশে ব্যবহার করা। এজন্য কোর্ট অব রেকর্ড হিসেবে হাইকোর্টে রিপোর্টসহ আবেদন দাখিল করেছি। আদালত রুল জারি করেছেন।

২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ ও গুরুতর আহতসহ অনেক বিক্ষোভকারীর সঙ্গে কথা বলে ইতোমধ্যে প্রতিবেদন দেয় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দফতরের (ওএইচসিএইচআর) তথ্যানুসন্ধান দল। প্রতিবেদন গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকাশিত হয়।

২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করে এবং গুরুতর আহতসহ বহু বিক্ষোভকারীর সঙ্গে কথা বলে একটি তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন তৈরি করে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) তথ্যানুসন্ধান দল। এই প্রতিবেদনটি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকাশিত হয়, যা দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। জাতিসংঘের প্রতিবেদনটি যুক্ত করে চলতি বছরের মে মাসে সম্পূরক আবেদনটি করেন রিট আবেদনকারী।

জুলাই গণহত্যা,জাতিসংঘের প্রতিবেদন,ঐতিহাসিক দলিল,নির্দেশ,হাইকোর্ট
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত