অনলাইন সংস্করণ
২১:২৬, ২৫ আগস্ট, ২০২৫
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নোমান গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. নূরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটি (নং-৩১) রেকর্ড করেন সংস্থাটির সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এর সহকারী পরিচালক মো. সাইদুল ইসলাম।
এজাহারে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে নূরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ১৮ কোটি ৯৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, তিনি অসাধু উপায়ে সম্পদ অর্জন করে নিজের ভোগদখলে রেখেছেন। এ ছাড়া এই সম্পদ অর্জনে অন্যদের সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা, তা তদন্তে বের করা হবে।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে নূরুল ইসলামের নামে ঢাকার গুলশান-২ এর একটি বাড়ির অর্ধেকাংশ, পূর্বাচল নতুন শহর আবাসিক প্রকল্পে সাতটি প্লটসহ স্থাবর সম্পদ পাওয়া গেছে, যার মূল্য ২৩ কোটি ৪০ লাখ ৮৮ হাজার ৪৯৯ টাকা। এছাড়া ডাচ-বাংলা ব্যাংক পিএলসি’র শেয়ারের মূল্য ৮ কোটি ৩০ লাখ ৫১ হাজার ৪৫০ টাকা এবং নোমান গ্রুপভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শেয়ার মূল্য ২৪ কোটি ৯৫ লাখ ৪ হাজার ৫০০ টাকা।
সব মিলিয়ে অস্থাবর সম্পদের মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৩৮ কোটি ৮১ লাখ টাকা। ফলে স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে তার মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬২ কোটি ২১ লাখ ৯৪ হাজার ৪৬৮ টাকা।
২০২৪-২৫ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন অনুযায়ী তার দায়দেনা মাত্র ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা। ফলে দায়দেনা বাদ দিলে নূরুল ইসলামের নীট সম্পদ দাঁড়ায় ৬২ কোটি ১৮ লাখ টাকারও বেশি। এর মধ্যে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদের পরিমাণ পাওয়া যায় ১৮ কোটি ৯৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, যা দুদক আইনের ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এজাহারে ঘটনাকাল হিসেবে ১৯৯৮-৯৯ করবর্ষ থেকে ২০২৪-২৫ করবর্ষ পর্যন্ত সময় উল্লেখ করা হয়েছে।
দুদক সূত্র জানায়, আইন অনুযায়ী অপরাধ প্রমাণিত হলে তার সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
প্রসঙ্গত, নূরুল ইসলামের বিরুদ্ধে এর আগে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের সহযোগী হিসেবে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা হত্যায় অর্থ যোগান দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া হাসিনা আমলে সরকারের আনুকূল্যে বিরোধপূর্ণ সম্পত্তি দখল, নামমাত্র মূল্যে জমি বন্ধক রেখে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং বিদেশে পাচারের অভিযোগে দুদকে তার বিরুদ্ধে অন্তত ১৩টি পৃথক অনুসন্ধান চলছে। এসব অনুসন্ধানে তার স্ত্রী, সন্তান, নাতি এবং প্রতিষ্ঠানটির বেতনভুক্ত কর্মচারিদের সংশ্লিষ্টতাও পাওয়া গেছে।