অনলাইন সংস্করণ
১১:৪৪, ১৮ নভেম্বর, ২০২৫
চোরাচালানের মাধ্যমে স্বর্ণ ও হীরা সংগ্রহ করে অবৈধ পন্থায় অর্জিত ৬৭৮ কোটি টাকার মানিলন্ডারিংয়ের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের মালিক দিলীপ কুমার আগরওয়ালার বিরুদ্ধে মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট। সোমবার গুলশান থানায় মামলাটি দায়ের করে সিআইডি।
সিআইডির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর সিআইডি ঢাকার ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের আর্থিক লেনদেন, নথিপত্র ও ব্যাংক হিসাব পর্যালোচনা করে অনুসন্ধান শুরু করে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় বাজার থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে স্বর্ণ ও হীরা সংগ্রহ করে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করেছে। প্রাথমিক তথ্য–প্রমাণে চোরাচালান ও উৎসহীন অর্থ অর্জনের সত্যতা মেলার পর ১৭ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে দিলীপ কুমার আগরওয়ালার বিরুদ্ধে ৬,৭৮,১৯,১৪,০১৪ টাকার মানিলন্ডারিং মামলা রুজু করা হয়। মামলার নম্বর গুলশান থানার মামলা নং–৩০, ধারা ৪(২)(৪), মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ (সংশোধিত–২০১৫)।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, দিলীপ কুমার আগরওয়ালা ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড ও ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে দেশে ও বিদেশে স্বর্ণ ও হীরা ব্যবসার আড়ালে অর্থপাচার এবং চোরাচালানের কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন।
সিআইডির প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটি ২০০৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এলসির মাধ্যমে বৈধভাবে ৩৮,৪৭,৪৮,০১১.৫২ টাকার স্বর্ণবার, অলংকার, লুজ ডায়মন্ডসহ বিভিন্ন দ্রব্য আমদানি করে।
একই সময়ে স্থানীয় বাজার থেকে ক্রয়, বিনিময় বা পরিবর্তনের মাধ্যমে ৬,৭৮,১৯,১৪,০১৪ টাকার স্বর্ণ ও হীরা সংগ্রহ করে, কিন্তু এসব বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ ও হীরার উৎস বা সরবরাহকারী সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানটি বৈধ কোনো তথ্য বা কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। ফলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে যে এসব সম্পদ চোরাচালানের মাধ্যমে দেশে আনা হয়েছে।
চোরাচালানের মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ ও অপরাধলব্ধ অর্থ রূপান্তর, হস্তান্তর বা ব্যবহারের নথিপত্র পর্যালোচনায় মানিলন্ডারিংয়ের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেলে অনুসন্ধান প্রতিবেদন অতিরিক্ত আইজিপি সিআইডি বরাবর পাঠানো হয়। পরবর্তীতে ১৬ নভেম্বর সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট মামলা দায়েরের অনুমোদন পায়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড ও ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় দায়ের হওয়া মামলাটি সিআইডির তফসিলভুক্ত হওয়ায় তদন্তের দায়িত্বও সিআইডির ওপরই ন্যস্ত থাকবে। প্রতিষ্ঠানটির যাবতীয় নথি, ব্যাংক হিসাব, ব্যবসায়িক লেনদেন এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তথ্য যাচাই করে আইন অনুযায়ী গভীর তদন্ত চালানো হবে।
রাষ্ট্রের অর্থপাচারে জড়িত ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে আইনের আওতায় আনা এবং রাষ্ট্রের আর্থিক স্বার্থ রক্ষায় সিআইডির এসব কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।