ঢাকা মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ফের লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজার, বিপাকে সাধারণ মানুষ

ফের লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজার, বিপাকে সাধারণ মানুষ

দেশের বাজারে ফের লাগামহীন হয়ে পড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। কয়েক দিন ধরে সব ধরনের সবজির দাম বাড়ছে লাগাতারভাবে, যার প্রভাব আজও (শুক্রবার) রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে স্পষ্ট। বাসাবাড়িতে নিয়মিত খাওয়া হয় এমন অধিকাংশ সবজির কেজি এখন ৮০ টাকার ওপরে। এ অবস্থায় নিম্ন ও সীমিত আয়ের মানুষেরা চরম সংকটে পড়েছেন।

শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বেগুনের দাম।

বর্তমানে ১০০ টাকার নিচে কোনো বেগুন নেই, সর্বোচ্চ দাম ২০০ টাকা। তিন সপ্তাহ আগেও ৬০–১৪০ টাকার মধ্যে বেগুন মিলত। করলা, বরবটি, কাঁকরোলের কেজি ১০০–১২০ টাকা, আমদানি করা টমেটো ১৬০–১৮০ টাকা, পটোল, ঢেঁড়স, ঝিঙা ৮০–১০০ টাকা, আর চিচিঙ্গা, ধুন্দুল, কচুমুখি ৬০–৮০ টাকা। মাত্র হাতে গোনা কয়েকটি সবজি— যেমন মিষ্টিকুমড়া, পেঁপে, কাঁচকলা— ৫০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিপিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৭০–৮০ টাকা, চালকুমড়া ৫০–৭০ টাকা। কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে ২০০–২৪০ টাকা।

রাজধানীর সেগুনবাগিচা বাজারে কেনাকাটা করতে আসা বেসরকারি এক চাকরিজীবী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বাজারে সব ধরনের সবজির অতিরিক্ত দাম। অথচ কী কারণে দাম বাড়ছে বা বাজার নিয়ন্ত্রণে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, সেটা দেখা যাচ্ছে না। সবজির এত দাম হলে সাধারণ মানুষ খাবে কী?’

বিক্রেতারা বলছেন, টানা বৃষ্টি ও মৌসুমের শেষের কারণে ক্ষেত থেকে সবজি তোলা কঠিন হয়ে পড়েছে, পাশাপাশি পরিবহন খরচ বেড়েছে। এতে পাইকারি ও খুচরা দামের ফারাকও বেড়েছে।

মগবাজারের এক সবজি বিক্রেতা বলেন, ‘আড়তে সরবরাহ খুবই কম। বৃষ্টির কারণে ফসলের ক্ষতি হয়েছে, মৌসুমও শেষের দিকে। ফলে পাইকারিতে দাম বেশি, খুচরায়ও সেই প্রভাব পড়ছে।’

এদিকে সবজির চড়া দামের পাশাপাশি মুরগি, ডিম ও মাছের বাজারেও বেড়েছে চাপ। ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ১৭০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩২০–৩৪০ টাকা, দেশি মুরগি ৬০০–৭০০ টাকা, লাল লেয়ার ৩২০ টাকা ও সাদা লেয়ার ৩১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হাঁস জাতভেদে ৫০০–৬০০ টাকা। লাল ডিম ডজনপ্রতি ১৪৫–১৫০ টাকা, সাদা ডিম ১৩৫–১৪০ টাকা, হাঁসের ডিম ২৩০ টাকা।

মাছের বাজারেও চড়া দাম— বড় ইলিশ কেজি ২৪০০–২৫০০ টাকা, ছোট ইলিশ ১৫০০–১৮০০ টাকা, বড় রূপচাঁদা ১৬০০ টাকা, ছোট রূপচাঁদা ১০০০ টাকা, কাতলা ৭০০–৮০০ টাকা, বোয়াল ৯০০ টাকা, তেলাপিয়া ৪০০–৪৫০ টাকা, শিং মাছ ৫০০–৬০০ টাকা।

পেঁয়াজের পাইকারি দাম কিছুটা কমলেও খুচরা বাজারে তার প্রভাব পড়েনি। এখনো কেজি ৮৫–৯০ টাকায় কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। এক ক্রেতা বলেন, ‘এটা এক ধরনের জুলুম। সরকারকে শুধু আমদানিই নয়, মাঠ পর্যায়ে তদারকি বাড়াতে হবে।’

বাংলাদেশ কাঁচামাল আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি মো. ইমরান মাস্টার বলেন, বর্তমানে কম উৎপাদনের মৌসুম চলছে। এ সময় আবহাওয়ার কারণে চাষ কম হয়, ফলে সরবরাহও কমে যায়। তাই বাজারে সবজির দাম বেশি।

সাধারণ মানুষ,নিত্যপণ্যের বাজার,ফের লাগামহীন
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত