ঢাকা সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

জোরপূর্বক তল্লাশি: কাতার এয়ারওয়েজের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলীয় নারীদের মামলা চালুর অনুমতি

জোরপূর্বক তল্লাশি: কাতার এয়ারওয়েজের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলীয় নারীদের মামলা চালুর অনুমতি

২০২০ সালে দোহা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পাঁচ অস্ট্রেলীয় নারী যাত্রীকে জোরপূর্বক বিমান থেকে নামিয়ে শারীরিকভাবে পরীক্ষা করা হয়েছিল একটি পরিত্যক্ত নবজাতকের সন্ধানে। এই ঘটনায় মানসিক ও শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ওই নারীরা কাতার এয়ারওয়েজের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল আদালত রায় দিয়েছেন—তারা কাতার এয়ারওয়েজের বিরুদ্ধে মামলা চালাতে পারবেন।

ঘটনাটি ঘটে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে, যেটি দোহা থেকে সিডনির উদ্দেশে যাত্রা করছিল। বিমানবন্দরে এক নবজাতককে প্লাস্টিকে মোড়ানো অবস্থায় আবর্জনার মধ্যে পাওয়া গেলে, কর্তৃপক্ষ একাধিক ফ্লাইট থামিয়ে নারী যাত্রীদের জোর করে পরীক্ষা করে। ওই পাঁচ নারীকে বন্দুকের মুখে বিমান থেকে নামিয়ে বিমানের ডানার নিচে থাকা অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে গিয়ে ব্যক্তিগতভাবে শরীর পরীক্ষা করা হয়, যা ছিল ‘অত্যন্ত লজ্জাজনক ও অবমাননাকর’ বলে দাবি তাদের আইনজীবীর।

আদালতের মতে, মন্ট্রিয়াল কনভেনশনের ১৭ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিমানযাত্রায় যাত্রীদের ওপর সংঘটিত শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির জন্য বিমান সংস্থাকে দায়ী করা যায়। পূর্ববর্তী বিচারক এই যুক্তি খারিজ করে দিলেও নতুন তিন সদস্যের বিচারপ্যানেল একমত হন যে, যাত্রীরা এখনো ‘এমবার্কিং বা ডিসএম্বার্কিং’-এর পর্যায়ে ছিলেন, সুতরাং কনভেনশন প্রযোজ্য।

নারীদের আইনজীবী জানান, এখনো অনেক প্রশ্নের উত্তর মেলেনি—কে এই তল্লাশির নির্দেশ দিয়েছিল, বা কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তা স্পষ্ট নয়। তবে মামলার পরবর্তী ধাপে এসব তথ্য বের করার চেষ্টা চলবে।

নারীরা কাতার এয়ারওয়েজ ছাড়াও দোহা বিমানবন্দরের অপারেটর MATAR এবং কাতার সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটির (QCAA) বিরুদ্ধেও মামলা করেছিলেন। যদিও আদালত QCAA-এর বিরুদ্ধে মামলা চালানোর অনুমতি দেয়নি, MATAR-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ সংশোধন করে মামলা চালানো যাবে বলে জানিয়েছে।

এ ঘটনায় কাতার সরকার একবার বলেছিল, যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে তারা এমন পদক্ষেপ নিয়েছিল এবং পরবর্তীতে কিছু নিরাপত্তাকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শিশুটির মাকে চিহ্নিত করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়।

ঘটনার পাঁচ বছর পরও ক্ষতিগ্রস্ত নারীরা ক্ষোভ ও কষ্ট বহন করে চলেছেন বলে জানিয়েছেন তাদের আইনজীবী, যিনি আরও বলেন—‘তারা এখনো কোনো ক্ষমা বা ক্ষতিপূরণ পাননি।’ মামলাটি আগামী বছর আদালতে পূর্ণাঙ্গভাবে শুনানির জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।

মামলা চালু,অস্ট্রেলীয় নারী,জোরপূর্বক তল্লাশি,কাতার এয়ারওয়েজ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত