অনলাইন সংস্করণ
১৯:৪৫, ১১ আগস্ট, ২০২৫
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের প্রতিবাদে ভারতে শুরু হয়েছে ব্যাপক মার্কিন পণ্য বয়কট আন্দোলন। ম্যাকডোনাল্ডস, কোকা-কোলা, অ্যামাজন ও অ্যাপলের মতো যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক ব্র্যান্ডগুলোকে বর্জনের ডাক দিচ্ছেন ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক কর্মী এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমর্থকরা।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ ভারতে আমেরিকান ব্র্যান্ড দীর্ঘদিন ধরে ধনী ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মধ্যে জনপ্রিয়। মেটার হোয়াটসঅ্যাপ, ডমিনোজ, পেপসি, কোকা-কোলা, অ্যাপল ও স্টারবাকসের মতো পণ্যে ভোক্তাদের আগ্রহ বরাবরই বেশি ছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর থেকে দেশীয় পণ্য কেনা এবং মার্কিন পণ্য বর্জনের ডাক অনলাইন ও অফলাইনে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, এখনো পর্যন্ত এই বয়কট আন্দোলনের ফলে বিক্রিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়ার প্রমাণ নেই। তবে রপ্তানিকারকদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে এবং দিল্লি-ওয়াশিংটন সম্পর্কের ওপর চাপ পড়ছে। এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে ম্যাকডোনাল্ডস, কোকা-কোলা, অ্যামাজন ও অ্যাপলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা সাড়া দেয়নি।
দেশটির বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ প্রচারণা জোরদার করছেন। ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ওয়াও স্কিন সায়েন্সের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মনীশ চৌধুরী এক ভিডিও বার্তায় দেশীয় কৃষক ও স্টার্টআপগুলোকে সমর্থনের আহ্বান জানিয়ে বিদেশি ব্র্যান্ডের বদলে দেশীয় পণ্য ব্যবহারের তাগিদ দিয়েছেন। একইভাবে ড্রাইভার সার্ভিস ‘ড্রাইভ ইউ’-এর প্রধান নির্বাহী রাহম শাস্ত্রী মন্তব্য করেছেন, ভারতেরও চীনের মতো নিজস্ব সোশ্যাল মিডিয়া ও প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্ম থাকা উচিত।
রবিবার বেঙ্গালুরুতে এক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আত্মনির্ভরতার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ভারতীয় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা করছে, কিন্তু এখন দেশীয় চাহিদাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার সময় এসেছে। যদিও তিনি সরাসরি কোনো মার্কিন কোম্পানির নাম উল্লেখ করেননি।
বিজেপি সমর্থিত স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ ছোট ছোট জনসভা ও সোশ্যাল মিডিয়ায় মার্কিন ব্র্যান্ড বর্জনের প্রচার চালাচ্ছে। তারা দেশীয় বিকল্প পণ্যের তালিকা হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে দিচ্ছে এবং বিদেশি ফুড চেইনের লোগো বর্জনের আহ্বান জানাচ্ছে।
এদিকে প্রতিবাদের মধ্যেই সোমবার নয়াদিল্লিতে দ্বিতীয় শোরুম উদ্বোধন করেছে ইলন মাস্কের টেসলা। অনুষ্ঠানে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তবে সাধারণ ভোক্তাদের মধ্যে মতভেদ দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ জাতীয় স্বার্থে বয়কট সমর্থন করছেন, আবার অনেকে বিষয়টিকে কেবল কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব হিসেবে দেখছেন এবং দৈনন্দিন পছন্দের পণ্যে এর প্রভাব ফেলতে চান না।