
মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর জন্য নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। আগে, অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের কম সংখ্যক রিক্রুটিং এজেন্সি সুযোগ পেত। বর্তমান সরকার অন্যান্য কর্মী প্রেরণকারী দেশের সঙ্গে সমতা রক্ষার উদ্যোগ নেয় এবং বৈধ লাইসেন্সধারী সকল এজেন্টকে অন্তর্ভুক্ত করতে মালয়েশিয়া সরকারকে অনুরোধ জানায়।
গত ২১ ও ২২ মে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া ৩য় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনার পর মালয়েশিয়া পক্ষ বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্ট নির্বাচনের মানদণ্ড নির্ধারণের প্রতিশ্রুতি দেয়। সেই ধারাবাহিকতায় গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশকে ‘রিক্রুটিং এজেন্ট সিলেকশন ক্রাইটেরিয়া’ পাঠিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিততে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে আরও জানানো হয়, ভবিষ্যতে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান ও মিয়ানমারের ক্ষেত্রে একই মানদণ্ড প্রযোজ্য হবে।
বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্ট সিলেকশন মানদণ্ডগুলো হলো—
১. লাইসেন্স প্রাপ্তির পর ন্যূনতম ৫ বছর সন্তোষজনক কার্যক্রম পরিচালনার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
২. বিগত ৫ বছরে বিদেশে ন্যূনতম ৩ হাজার কর্মী পাঠানোর প্রমাণ থাকতে হবে।
৩. বিগত ৫ বছরের মধ্যে অন্তত ৩টি ভিন্ন ভিন্ন গন্তব্য দেশে কর্মী প্রেরণ ও কর্মসংস্থানের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
৪. প্রশিক্ষণ, মূল্যায়ণ, নিয়োগ এবং বিদেশে কর্মসংস্থানের বিষয়ে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক রিক্রুটিং এজেন্সির অনুকূলে বৈধ লাইসেন্স থাকতে হবে।
৫. কর্মী প্রেরণকারী দেশের যথাযথ কর্তৃপক্ষ থেকে রিক্রুটিং এজেন্সির অনুকূলে সদাচরণের সনদ থাকতে হবে।
৬. এজেন্সির বিরুদ্ধে জবরদস্তিমূলকভাবে শ্রমে নিয়োগ, মানব পাচার, শ্রম আইন লঙ্ঘন, জোরপূর্বক অর্থ আদায়, অর্থপাচার বা অন্য কোনো আর্থিক অপরাধ এবং অনৈতিক অভিবাসন কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার রেকর্ড থাকা যাবে না।
৭. সামগ্রিক সুবিধাদিসহ রিক্রুটিং এজেন্সির নিজস্ব প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন কেন্দ্র থাকতে হবে, যেখানে আবাসন, কারিগরি প্রশিক্ষণ সুবিধাসহ দিকনির্দেশনা মডিউল থাকতে হবে।
৮. এজেন্সির অনুকূলে পৃথক পৃথক ৫ জন আন্তর্জাতিক নিয়োগকর্তা থেকে দেওয়া সন্তোষজনকভাবে অভিবাসন কার্যক্রম সম্পাদনের প্রশংসাপত্র থাকতে হবে।
৯. রিক্রুটিং এজেন্সির অবশ্যই কমপক্ষে ৩ বছর যাবৎ পরিচালিত ন্যূনতম ১০ হাজার বর্গফুট আয়তনবিশিষ্ট একটি স্থায়ী অফিস থাকবে, যেখানে কর্মী বাছাই ও নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনার মতো অবকাঠামোগত সুবিধা থাকতে হবে।
১০. রিক্রুটিং এজেন্সির অবশ্যই ইতঃপূর্বে বিদেশে কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে গন্তব্য দেশের (মালয়েশিয়াসহ) নিয়োগ প্রক্রিয়ার শর্তাবলী আইনসম্মত ও পদ্ধতিগতভাবে অনুসরণ করার প্রমাণ থাকতে হবে।বিজ্ঞপ্তিততে বলা হয়েছে, এসব শর্ত পূরণকারী সকল রিক্রুটিং এজেন্টকে কোনোরূপ ব্যত্যয় না ঘটিয়ে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর জন্য তালিকাভুক্ত করতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে মালয়েশিয়া সরকারকে অনুরোধ জানানো হবে।
‘নির্ধারিত সিলেকশন ক্রাইটেরিয়া’ পূরণে সক্ষম বাংলাদেশের বৈধ লাইসেন্সধারী রিক্রুটিং এজেন্টগুলোকে আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে কাগজপত্রসহ আবেদন দাখিল করার জন্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে।