অনলাইন সংস্করণ
১২:৪১, ১৮ নভেম্বর, ২০২৫
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম দাবি করেছেন, মাত্র দেড় বছরে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এমন সব সাফল্য অর্জন করেছে, যা এর আগে বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো সরকার এত কম সময়ে করতে পারেনি। তার ভাষায়, এই সরকার কয়েক দশকে দেশের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ প্রশাসনগুলোর একটি হয়ে উঠে এসেছে।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
স্ট্যাটাসে তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে এবং তাদের নির্ধারিত প্রায় সব লক্ষ্যই অর্জিত হয়েছে।
তবে তিনি এটিও স্বীকার করেন যে, নাম ছাড়া সব দিক থেকেই এই সরকারকে অনেকেই একটি সাধারণ, এনজিও-ধাঁচের, দুর্বল প্রশাসন হিসেবে দেখে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারস্পরিক শুল্ক চুক্তিতে অগ্রগতি না হওয়া, বিভিন্ন দফতরে অদক্ষতা, নতুন আইন পাসে জটিলতা এবং ছোট গোষ্ঠীর চাপের কাছে নতি স্বীকারসহ নানা কারণে কেউ কেউ এই সরকারকে ‘ভীতু’ বা ‘কিছু না করা সরকার’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন।
শফিকুল আলম বলেন, এসব সমালোচনা থাকলেও বাস্তবতা ভিন্ন। তার মতে, ১৫ মাসে যে পরিবর্তনগুলো এসেছে, তা দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতি, অর্থনীতি ও প্রশাসনিক কাঠামোয় নতুন পথ তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, বিপ্লব-পরবর্তী প্রতিশোধমূলক সহিংসতা বন্ধ হয়ে দেশে শান্তি ফিরেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো লবিং ফার্ম ছাড়াই গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। শ্রম আইন সংস্কারসহ রেকর্ডসংখ্যক আইন পাস হয়েছে। জুলাই ডিক্লারেশন ও জুলাই চার্টার ভবিষ্যৎ রাজনীতির জন্য নতুন পথরেখা তৈরি করেছে।
তিনি আরও জানান, সুপ্রিম কোর্ট এখন নিম্ন আদালতের ওপর কার্যকর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে, ফলে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মামলা ব্যবস্থাপনায় হস্তক্ষেপ করা কঠিন হবে। অন্যদিকে, লালদিয়া টার্মিনালে ইউরোপীয় শীর্ষ বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ইউরোপীয় বিনিয়োগ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
স্ট্যাটাসে তিনি দাবি করেন, অর্থনীতি আবার উন্নয়নমুখী হয়েছে, ব্যাংক খাতের লুটপাট উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, টাকা স্থিতিশীল হয়েছে এবং খাদ্যস্ফীতি ১৪ শতাংশ থেকে কমে ৭ শতাংশে নেমে এসেছে। পাশাপাশি অতীতের নির্যাতন, গুম, রাজনৈতিক সহিংসতা ও সাজানো ক্রসফায়ারের মতো অভিযোগ বন্ধ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সংস্কৃতি অঙ্গনে নতুন ডকুমেন্টারি আন্দোলন জনমত গঠনে প্রভাব ফেলেছে, যাকে তিনি ‘ফারুকী ইফেক্ট’ হিসেবে অভিহিত করেন। সংবাদমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার হয়েছে বলেও দাবি করেন প্রেস সচিব।
স্ট্যাটাসের শেষ অংশে তিনি উল্লেখ করেন, আগের অপব্যবহার ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে আদালতে জবাবদিহিতা তৈরি হয়েছে এবং শেখ হাসিনাকেও তার অবস্থান বুঝিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।