অনলাইন সংস্করণ
১৬:৩০, ২৬ আগস্ট, ২০২৫
সংস্কৃতিকর্মীদের একাংশ আবারও ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বৈরাচারের জন্য মায়াকান্না করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান।
তিনি বলেন, আপনারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে বাংলাদেশকে শোষণ করেছেন। আপনাদের সহযোগিতায় আপনাদের সরকার শোষণ করেছে। প্রতিবাদী শিল্পীসমাজ যাঁরা আছেন, তাঁদের বলতে চাই, সব সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকবেন। সেই সোচ্চার হবে জনগণের অধিকারের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) আয়োজিত ‘কালচারাল ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন’ কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
সংস্কৃতিকর্মীদের একাংশের উদ্দেশে সেলিমা রহমান বলেন, ৫ আগস্ট যে গণ-অভ্যুত্থান হয়েছিল, সেই গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র, যুবক, শ্রমিক, জনতা, নারী, পুরুষ, শিশু সবাই নেমে এসেছিল। সবার বুকে আহাজারি ছিল। সেদিন শিশুদের হত্যা করা হয়েছে। আমার ছাত্র ভাইদের হত্যা করা হয়েছে। খুন করা হয়েছে। সেই দোষ, আপনাদের স্বৈরসরকারের। গণ-অভ্যুত্থানে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে তারা। কিন্তু আপনারা এখনো ভুলতে পারছেন না। আপনারা ষড়যন্ত্র করছেন।
তিনি আরও বলেন, শিল্পীসমাজ থাকবে সব সময় সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে। কিন্তু আজ দুঃখজনক হলেও সত্যি, আমাদের শিল্পীসমাজের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আপনারা সজাগ হন। আপনারা শিল্পী মানুষ, শিল্পচর্চা করেন। আপনাদের শিল্পচর্চার মধ্য দিয়ে এ দেশের মানুষের জীবন, এ দেশের মানুষের কথা বলার যে অধিকার, সেই অধিকার যেন ফিরে আসে। আপনারা সাবধান হয়ে যান। কারণ ছাত্র-জনতা এবং নারী-পুরুষ-শিশু সবাই আজ সচেতন।
তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট শহীদ জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়েই এই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। তিনি নিজে যুদ্ধ করে এই দেশকে স্বাধীন করেছেন। শুধু তা-ই নয়, রণাঙ্গনে যুদ্ধ করে তিনি বাংলাদেশকে আমাদের উপহার দিয়েছিলেন। এরপর আমাদের আরেক নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াও এই দেশকে স্বৈরাচারী শাসনের কবল থেকে মুক্ত করেছিলেন। সেই নেত্রীকে মিথ্যা মামলায় বছরের পর বছর ধরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়তে হয়েছে। কিন্তু তিনি কখনো আপস করেননি। তাঁর একটাই কথা, “এ দেশের জনগণ আমার সন্তান। আমি মরলে এ দেশেই মরব।” সন্তানদের অধিকার রক্ষায় তিনি কারাগারে যাওয়ার সময় বলেছিলেন, “দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও।” আজও তিনি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছেন।
সেলিমা রহমান বলেন, দ্রব্যমূল্যের ভয়াবহ অবস্থায় সিন্ডিকেটের কারণে সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ। আপনারা তো মানুষকে বিশ্বাস করেন না। আপনারা কীসের শিল্পী? আপনারা সম্পদ গড়ার জন্য কাজ করেছেন। বিভিন্ন রকম ভাবে অকল্পনীয় সবকিছু তুলে ধরেছেন। কিন্তু সমাজের যে সত্য কথা, সমাজের যে সুন্দর প্রতিচ্ছবি, সমাজের যে গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা, কোনোটাই আপনারা রাখেননি।
মানববন্ধনে জাসাসের যুগ্ম আহ্বায়ক গীতিকার ইথুন বাবু হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘২১ দিনের মধ্যে শিল্পকলা থেকে সচিবালয়—সব কটি জায়গা ফ্যাসিস্টমুক্ত করা না হলে কঠোর আন্দোলন ও কর্মসূচিতে যাব আমরা।’
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নাসরিন সুলতানা, সংস্কৃতিকর্মী শিবা শানুসহ অভিনয়শিল্পী, নাট্যশিল্পী ও চলচ্চিত্রশিল্পী সদস্যরা।