ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

বদরুদ্দীন উমর আর নেই

বদরুদ্দীন উমর আর নেই

লেখক, বুদ্ধিজীবী এবং প্রবীণ রাজনীতিবিদ বদরুদ্দীন উমর আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্নইলাহি রাজিউন)।

রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা ৫ মিনিটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আজ সকালে তিনি বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে অসুস্থ অবস্থায় বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে নিয়ে আসার পর ১০টা ৫ মিনিটে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর ১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার এক উচ্চবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আবুল হাশিম অবিভক্ত বাংলার প্রখ্যাত রাজনীতিক ও মুসলিম লীগের প্রগতিশীল ধারার নেতা ছিলেন। দেশভাগ-পরবর্তী নানা অনিশ্চয়তার মধ্যে ১৯৫০ সালে পরিবারসহ ঢাকায় চলে আসেন।

তিনি বর্ধমান টাউন স্কুল থেকে ১৯৪৮ সালে প্রবেশিকা, এবং বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে ১৯৫০ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ১৯৫৩ সালে দর্শনে স্নাতক (সম্মান) ও ১৯৫৫ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬১ সালে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিলোসফি, পলিটিক্স অ্যান্ড ইকোনমিকস (পিপিই) ডিগ্রি লাভ করেন।

শিক্ষাজীবন শেষে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ (১৯৬৩) প্রতিষ্ঠা করেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগেরও (১৯৬৬) যাত্রা শুরু হয় তারই হাত ধরে। ১৯৬৮ সালে তিনি পদত্যাগ করেন।

রাজনীতি ও সাংস্কৃতিক চর্চায় সক্রিয় এই বামপন্থী চিন্তাবিদ ছিলেন বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি এবং গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী। ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি সংস্কৃতি নামে একটি রাজনৈতিক সাময়িকী সম্পাদনা করেন। ১৯৭৫ সালে পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন এবং ২০০৩ সালে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করে সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

১৯৭২ সালে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ১৯৭৪ সালে ইতিহাস পরিষদ পুরস্কার এবং ২০২৫ সালে বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হন—তবে তিনি সবকটি পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,

“১৯৭৩ সাল থেকে আমাকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। আমি সেগুলোর কোনোটি গ্রহণ করিনি... বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করেছে। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ। কিন্তু তাদের দেওয়া এই পুরস্কারও গ্রহণ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।”

বদরুদ্দীন উমর,আর নেই,ইন্তেকাল,মৃত্যু
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত