ঢাকা বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

মানবসভ্যতায় কোরবানি : হাবিল-কাবিলের কোরবানি

ড. মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী
মানবসভ্যতায় কোরবানি : হাবিল-কাবিলের কোরবানি

হযরত আদম (আ.) মানব জাতির আদি পিতা। তার আগে পৃথিবীর বুকে কোনো মানুষের চিহ্ন ছিল না। তার বাম পাঁজরের বাঁকা হাঁড় থেকে আল্লাহতায়ালা সৃষ্টি করেন প্রথম মানবী হযরত হাওয়া (আ)-কে। তিনি আমাদের সবার মা। বাবা আদম ও মা হাওয়া (আ.)-এর মাধ্যমেই পৃথিবীতে মানুষের বংশবিস্তার হয়। তাদের দুজন সন্তানের নাম ছিল হাবিল আর কাবিল। একটি ঘটনায় কাবিল অন্যায়ভাবে আপন ভাই হাবিলকে হত্যা করে। এটি ছিল মানব ইতিহাসের প্রথম হত্যাকাণ্ড। এই ঘটনার ইতিহাস জানার একমাত্র মাধ্যম কোরআন মজীদ বা হাদীস ও রেওয়ায়াত সূত্রের বর্ণনা। নানা বর্ণনার ভিত্তিতে তাফসিরে মাআরেফুল কোরআনে ঘটনাটি কাহিনি আকারে উপস্থাপন করা হয়েছে এবং এটিই এ সম্পর্কিত সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ও বিশুদ্ধ ভাষ্য। আমরা মুফতি মুহাম্মদ শফী (রহ.)-এর উক্ত বর্ণনাটি এখানে তুলে ধরতে চাই।

হযরত আদম (আ.) এর পুত্রদ্বয়ের কোরবানির ঘটনাটি বিশুদ্ধ ও শক্তিশালী সনদসহ বর্ণিত হয়েছে। ইবনে কাসীর এ ব্যাপারে পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সর্বস্তরের আলেমরা একমত বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন। ঘটনার বিবরণ হলো, যখন আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.) পৃথিবীতে আসেন এবং মানব বংশবিস্তার আরম্ভ হয়, তখন হযরত হাওয়া (আ.)-এর প্রতি গর্ভ থেকে একটি পুত্র ও একটি কন্যার জমজ সন্তান জন্মগ্রহণ করত। তখন ভাইবোন ছাড়া আদম (আ.) আর কোনো সন্তান ছিল না। অথচ ভাইবোনে পরস্পর বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে না। তাই আল্লাহতায়ালা উপস্থিত প্রয়োজনের খাতিরে আদম (আ.)-এর শরীয়তে বিশেষভাবে এ নির্দেশ জারি করেন যে, একই গর্ভ থেকে যে যমজ পুত্র-কন্যা জন্মগ্রহণ করবে, তারা পরস্পর সহোদর ভাইবোন গণ্য হবে। তাদের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক হারাম হবে। কিন্তু পরবর্তী গর্ভ থেকে জন্মগ্রহণকারী পুত্রের জন্য প্রথম গর্ভ হতে জন্মগ্রহণকারী কন্যা সহোদরা বোন গণ্য হবে না। তাদের পরস্পর বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া বৈধ হবে।

ঘটনাচক্রে কাবিলের যমজ বোনটি ছিল পরমা সুন্দরী আর হাবিলের সহজাত কন্যাটি ছিল কুশ্রী ও কদাকার। বিবাহের সময় হলে নিয়মানুযায়ী হাবিলের সহজাত কুশ্রী কন্যা কাবিলের ভাগে পড়ল। এতে কাবিল অসন্তুষ্ট হয়ে হাবিলের শত্রু হয়ে গেল। সে জেদ ধরল যে, আমার সহজাত বোনকেই আমার সঙ্গে বিবাহ দিতে হবে। হযরত আদম (আ.) তার শরীয়তের আইনের পরিপ্রেক্ষিতে তার আব্দার প্রত্যাখ্যান করলেন। তিনি হাবিল ও কাবিলের মতভেদ দূর করার উদ্দেশ্যে বললেন: তোমরা উভয়ে আল্লাহর জন্য নিজ নিজ কোরবানি পেশ কর। যার কোরবানি কবুল হবে সেই উক্ত কন্যার পাণিগ্রহণ করবে। হযরত আদম (আ.) নিশ্চিত ছিলেন যে, যে সত্য পথে আছে তার কোরবানিই কবুল হবে।

তখনকার দিনে কোরবানি কবুল হওয়ার একটি সুনির্দিষ্ট নিদর্শন ছিল। আকাশ থেকে একটি অগ্নিগোলক নেমে এসে কোরবানিকে জ্বালিয়ে দিয়ে আবার হারিয়ে যেত। যে বা যার কোরবানিকে আগুন জ্বালাতো না, ধরে নেওয়া হত যে, তার কোরবানি কবুল হয়নি এবং তার দাবি নাকচ করা হয়েছে।

হাবিল ভেড়া দুম্বা ইত্যাদি পশু পালন করত। সে একটি উৎকৃষ্ট দুম্বা কোরবানি করল। কাবিল কৃষিকাজ করত। সে কিছু শস্য-গম ইত্যাদি কোরবানির জন্য পেশ করল। অতঃপর নিয়মানুযায়ী আকাশ থেকে অগ্নিশিখা নেমে এসে হাবিলের কোরবানিটি জ্বালিয়ে দিল এবং কাবিলের কোরবানি যেমন ছিল তেমনি পড়ে রইল। এ অকৃতকার্যতায় কাবিলের দুঃখ ও ক্ষোভ অনেক বেড়ে গেল। সে আত্মসংবরণ করতে পারল না। প্রকাশ্যে ভাইকে বলে দিল: ‘আমি অবশ্যই তোমাকে হত্যা করব।’

হাবিল তখন ক্রোধের জবাবে ক্রোধ প্রদর্শন না করে একটি মার্জিত ও নীতিগত বাক্য উচ্চারণ করল। এতে কাবিলের প্রতি তার সহানুভূতি ও শুভেচ্ছাও ফুটে উঠেছিল। সে বলল, ‘আল্লাহতায়ালার নিয়ম তো হলো, তিনি আল্লাহ ভীরু পরহেযগার লোকদের কর্মই গ্রহণ করেন। তুমি আল্লাহ ভীতি অবলম্বন করলে তোমার কোরবানিও কবুল হত। তুমি তা করনি। তাই তোমার কোরবানি প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। এতে আমার দোষ কী?

হাবিল ও কাবিলের কথাবার্তা এবং পুরো ঘটনার বিবরণ আমরা এখন কোরআন মজীদ থেকে জানার চেষ্টা করব। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন-

‘আপনি তাদের আদমের দুই পুত্রের বাস্তব অবস্থা পাঠ করে শোনান। যখন তারা উভয়ে কোরবানি করেছিল তখন একজনের কোরবানি কবুল হলো এবং অন্যজনের কবুল হলো না। সে বলল, ‘আমি তোমাকে হত্যা করবই।’ অপরজন বলল, অবশ্যই আল্লাহ মুত্তাকীদের কোরবানি কবুল করেন।’ (সূরা মায়েদা, আয়াত-২৭)।

অর্থাৎ হে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আপনি আহলে কিতাব বনি ইসরাঈল সম্প্রদায়কে হযরত আদম (আ.)-এর পুত্রদ্বয় হাবিল ও কাবিলের সংবাদ যথাযথভাবে পাঠ করে শুনিয়ে দিন। যাতে তাদের মধ্যে সৎলোকদের সঙ্গে সম্বন্ধযুক্ত থাকার দর্প চূর্ণ হয়ে যায়। এরা কথায় কথায় বলে, নাহনু আবনাউল্লাহ- আমরা আল্লাহর পুত্র। কাজেই কেউ যেন আমি অমুকের পুত্র, অমুকের সঙ্গে সম্বন্ধযুক্ত বলে অহমিকা প্রদর্শন থেকে বিরত থাকে। কেননা, প্রত্যেকের জীবনের শুভ ও অশুভ পরিণতি নির্ভর করবে তার কর্মফলের উপর। ঘটনাটি তখন ঘটেছিল, যখন তারা উভয়ে আল্লাহর নামে একটি কোরবানি নিবেদন করেছিল। তখন হাবিলের কোরবানি কবুল হয়েছিল এবং কাবিলের কোরবানি কবুল হয়নি। কেননা, যে বিষয়ের মীমাংসার জন্য এ কোরবানি নিবেদন করা হয়েছিল তাতে হাবিল ছিল ন্যায়পথে। তাই তার কোরবানি কবুল হয়েছিল। অপরপক্ষে কাবিল ন্যায়পথে ছিল না। তাই তার কোরবানি প্রত্যাখ্যাত হয়। এরূপ না হলে কোনো মীমাংসাই হত না এবং সত্য ধামাচাপা পড়ে যেত। যখন কাবিল এতেও হেরে গেল, তখন ক্রোধান্বিত হয়ে বলতে লাগল, আমি অবশ্যই তোমাকে হত্যা করব। অপরজন অর্থাৎ হাবিল উত্তর দিল, তোমার পরাজয় তো তোমার অন্যায়পথে থাকার কারণেই। এতে আমার কী দোষ। কেননা, আল্লাহতায়ালা ধর্মভীরুদের অমলই গ্রহণ করেন। আমি ধর্মভীরুতা অবলম্বন করে আল্লাহর নির্দেশ মেনে চলেছি। তিনি আমার উৎসর্গ ও কোরবানি কবুল করেছেন। তুমি তাকওয়া বর্জন করেছ এবং আল্লাহর নির্দেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছ। তিনি তোমার উৎসর্গ কবুল করেননি। তুমি নিজেই বিচার কর। এতে দোষ তোমার না আমার। এরপরও যদি তুমি তাই চাও তবে এর পরিণাম তুমি জান। আমার দৃঢ় সংকল্প এই যে, ‘তুমি যদি আমাকে হত্যা করার জন্য হাত তুলো, তোমাকে হত্যা করার জন্য আমি হাত তুলব না; আমি তো জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহকে ভয় করি।’ (সূরা মায়েদা, আয়াত-২৮)।

অর্থাৎ তুমি যদি আমাকে হত্যা করার জন্য আমার দিকে হাত বাড়াও তবুও আমি তোমাকে হত্যা করার জন্য তোমার দিকে হাত বাড়াব না। কেননা, আমি বিশ্বজগতের পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় করি। তোমাকে হত্যা করার জন্য যদিও আমার কাছে একটি বৈধ যুক্তি আছে, তাহলো তুমি আমাকে হত্যা করতে চাও। কিন্তু এই বৈধতার ব্যাপারে আজ পর্যন্ত আল্লাহর কোনো নির্দেশ আমি লাভ করিনি। ফলে এ ব্যাপারে আমি আল্লাহকে ভয় করি। কিন্তু তোমার অবস্থা অন্যরূপ। যদিও আমাকে হত্যা করার দুঃসাহস করছ এবং আল্লাহকে ভয় করছ না। কাজেই ‘আমি চাই যে, তুমি আমার ও তোমার পাপের বোঝা বহন কর এবং তুমি দোযখীদের অন্তর্ভুক্ত হও। এটই অত্যাচারীদের শাস্তি।’ (সূরা মায়েদা, আয়াত-২৯)।

অর্থাৎ আমি চাই, যেন আমার দ্বারা কোনো পাপ কাজ না হয়- তুমি আমার প্রতি যত অন্যায়ই কর না কেন। যাতে আমার পাপ ও তোমার পাপ তুমি নিজের মাথাতেই চাপিয়ে নাও, অতঃপর তুমি দোযখীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও। এটাই অত্যাচারীদের শাস্তি। কাবিল তো আগেই হত্যার সংকল্প করে ফেলেছিল; এখন যখন শুনল যে, প্রতিরক্ষারও চেষ্টা করবে না, তখন তার দয়া বিগলিত হওয়া উচিত ছিল। তার পরিবর্তে ‘অতঃপর তার অন্তর তাকে ভাইকে হত্যায় উত্তেজিত করল। ফলে সে তাকে হত্যাই করে ফেলল। ফলে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল।’ (সূরা মায়েদা, আয়াত-৩০)।

অর্থাৎ শেষ পর্যন্ত সে ভাইকে হত্যা করেই ফেলল। তাতে হতভাগা ক্ষতিকগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল। জাগতিক ক্ষতি হলো, সে আপন ভাইকে হারাল। আর পরকালীন ক্ষতি হলো, হত্যার মতো জঘন্য পাপের শাস্তি তাকে ভোগ করতে হবে। হত্যার পর মৃতদেহ কী করা হবে এবং এ রহস্য কীভাবে গোপন থাকবে- সে বিষয়ে কাবিল দিশাহারা হয়ে পড়ল। যখন কিছুই বুুঝতে পারল না তখন, ‘অতঃপর আল্লাহ এক কাক পাঠালেন, সে তার ভাইয়ের লাশ কীভাবে গোপন করা যায়, তা দেখানোর জন্য মাটি খনন করতে লাগল। সে বলল, হায়! আমি কি এই কাকের মতোও হতে পারলাম না, যাতে আমার ভাইয়ের লাশ গোপন করতে পারি। অতঃপর সে অনুতপ্ত হলো।’ (সূরা মায়েদা, আয়াত-৩১)।

কাকটি চঞ্চু এবং নখর দ্বারা মাটি খনন করছিল এবং খনন করে অপর একটি মৃত কাককে গর্তে ফেলে দিয়ে তার ওপর মাটি ফেলছিল, যাতে কাক কাবিলকে আপন ভাইয়ের লাশ কীভাবে আবৃত করবে তা শিক্ষা দেয়। কাবিল এ ঘটনা দেখে মনে মনে অনুতপ্ত হলো যে, একটি সামান্য কাকের বুদ্ধিও আমার মধ্যে নেই। সে নিরাতিশয় অনুতপ্ত হয়ে বলতে লাগল যে, আফসোস! আমি কি এতই অক্ষম যে, কাকের তুল্যও হতে পারিনি এবং আপন ভাইয়ের মৃতদেহ গোপন করতে পারিনি। অতঃপর সে এ দুরবস্থার জন্য খুবই লজ্জিত হলা।

এই অনুতাপ, মর্মবেদনা, লজ্জা ও অপমান তাকে ভীষণভাবে তাড়া করতে লাগল। সে যেদিকেই যায় পাহাড় যেন প্রতিধ্বনি করে তাকে ধিক্কার দেয়। আশপাশের বৃক্ষরাজি তার নিন্দাবাদ করে। ঘুমাতে গেলে মানুষ হত্যার আতঙ্কে সে আঁতকে উঠে। এভাবে উন্মাদ হয়ে যায়। নিরুদ্দেশ হয়ে অসহায় অবস্থায় মৃত্যুর মুখ ঢলে পড়ে। এ জন্যই বলা হয়েছে, ‘ফলে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল।’

‘এ কারণেই বনি ইসরায়েলের প্রতি এই বিধান দিলাম যে, নরহত্যা অথবা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কাজ করার হেতু ব্যতীত কেউ কাউকে হত্যা করলে সে যেন দুনিয়ার সকল মানুষকেই হত্যা করল। আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে সে যেন সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করল। তাদের কাছে তো আমার রাসূলগণ স্পষ্ট প্রমাণ এনেছেন; কিন্তু এরপরও তাদের অনেকে পৃথিবীতে সীমালংঘনকারীই রয়ে গেল।’ (সূরা মায়েদা, আয়াত-৩২)।

এ কারেণেই আমি সকল শরীয়তে; বিশেষ করে বনি ইসরাঈলের প্রতি এই বিধান বিধিবদ্ধ করে দিয়েছি যে, মানুষ হত্যা এতবড় পাপ যে, কেউ যদি কোনো নরহত্যার বদলা ছাড়া বা পৃথিবীতে ফাসাদ ও অনর্থ সৃষ্টির কারণ ছাড়া কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করে ক্ষেত্রবিশেষে তা এতবড় গোনাহ হবে যে, সে যেন পৃথিবীর সব মানুষকে হত্যা করল। এখানে নরহত্যার শাস্তি ‘ফ্যাসাদ ও বিপর্যয় সৃষ্টির কারণ ব্যতিরেকে’ বলে দুটি ক্ষেত্রকে আলাদা করে বোঝানোর কারণ হচ্ছে, কেউ যদি অন্যায়ভাবে কোনো মানুষ হত্যা করে বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাকে হত্যা করা জায়েজ। অনুরূপভাবে ডাকাতি রাহজানীর বেলায়ও বিচারব্যবস্থার আওতায় প্রাণদণ্ড দেওয়া বৈধ এবং ক্ষেত্রবিশেষে ওয়াজিব। অন্যায়ভাবে হত্যার জন্য পাপ যেমন বিরাট, তেমনি কাউকে অন্যায় হত্যার হাত থেকে বাঁচানোর সওয়াবও বিরাট। আল্লাহর পয়গাম্বররা এই বিধান নিয়ে পৃথিবীতে আগমন করেছেন। কিন্তু বনি ইসরায়েলের অনেকেই পৃথিবীতে সীমালংঘন করতে থাকে। এমনকি স্বয়ং নবী-রাসূলদের হত্যা করে।

(আয়াতের তরজমা ও তাফসিরে ইসলামিক ফাউন্ডেশনকৃত আল-কোরআনুল করীম ও তাফসিরে মাআরেফুল কোরআন অনুসরণ করা হয়েছে।)

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত