ইসলামে সুন্দর নাম রাখতে ও সুন্দর নামে ডাকতে বলা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে বর্তমানে অনেককে দেখা যায়, তারা অন্যের নাম বিকৃত করেন। প্রায়ই কাউকে ব্যঙ্গ করে মন্তব্য করেন বা কথা বলেন। বিশেষ করে ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক ও লাইকিসহ আরও অনেক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যঙ্গ ও ট্রলে সয়লাব। তা ছাড়া বন্ধুমহল ও গল্প-গুজবের আসর এবং বিভিন্ন আড্ডায়ও অন্যের নাম বিকৃত করা কিংবা তাকে নিয়ে সমালোচনা করা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নাম নিয়ে ব্যঙ্গ করার এই প্রবণতা দিন দিন মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র। অথচ ইসলামি শরিয়ত মানুষের নাম নিয়ে ব্যঙ্গ করাকে মারাত্মক গোনাহ ও গর্হিত কাজ বলে ঘোষণা করেছে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ সবাইকে সতর্ক করে বলেন, ‘হে মোমিনরা, কোনো পুরুষ যেন অপর কোনো পুরুষকে বিদ্রূপ না করে। কেননা, তারা তাদের চেয়ে উত্তম হতে পারে এবং কোনো নারী অপর কোনো নারীকেও যেন বিদ্রূপ না করে, কেননা সে তাদের অপেক্ষা উত্তম হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ কোরো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না, ঈমানের পরে মন্দ নামে ডাকা গর্হিত কাজ। যারা এ ধরনের আচরণ পরিত্যাগ করে না, তারাই অত্যাচারী।’ (সুরা হুজরাত : ১১)।
মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘এক মুসলিম আরেক মুসলিমের ভাই। সে তার ওপরে জুলুম করবে না, তাকে সহযোগিতা করা পরিত্যাগ করে না এবং তাকে লাঞ্ছিত ও হেয় করবে না। কোনো ব্যক্তির জন্য তার কোনো মুসলিম ভাইকে হেয় ও ক্ষদ্রজ্ঞান করার মতো অপকর্ম আর নেই।’ (মুসনাদে আহমাদ : ১৬/২৯৭)। রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘ঈমানদারদের সঙ্গে অন্য একজন ঈমানদারের সম্পর্ক ঠিক তেমন, যেমন দেহের সঙ্গে মাথার সম্পর্ক। সে ঈমানদারদের প্রতিটি দুঃখ-কষ্ট ঠিক অনুভব করে, যেমন- মাথা দেহের প্রতিটি অংশের ব্যথা অনুভব করে’ (মুসনাদে আহমাদ : ৫/৩৪০)।
সুতরাং প্রতিটি মানুষের উচিত একে অপরকে সুন্দর নামে ডাকা এবং কারও নামকে বিকৃত করে কোনো ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে না ফেলা। অর্থাৎ ব্যঙ্গ ও তুচ্ছজ্ঞান করে এমন নামে না ডাকা অথবা এমন খেতাব বের না করা, যা সে অপছন্দ করে।
লেখক : আলেম ও সংগঠক