প্রিন্ট সংস্করণ
০০:০০, ০৬ অক্টোবর, ২০২৫
বই : ভারত-আরব সম্পর্কের আদি ইতিহাস
লেখক : সাইয়েদ সুলাইমান নদবী
অনুবাদ : আরিফ খান সাদ
প্রকাশক : নাশাত পাবলিকেশন
পৃষ্ঠা : ৩০০
দাম : ৪৯০ টাকা
প্রচ্ছদ : কাজী যুবাইর মাহমুদ
ভারতবর্ষ ও আরব বিশ্বের সম্পর্ক হাজার বছরের পুরোনো। সেই প্রাচীন যোগসূত্রের ঐতিহাসিক ও প্রামাণ্য বিশ্লেষণ পাওয়া যায় ভারতবর্ষের কিংবদন্তিতুল্য মনীষী, গবেষক আলেম ও ইতিহাসবিদ সাইয়েদ সুলাইমান নদবী রচিত ‘আরব ওয়া হিন্দ কে তাআল্লুকাত’ বইয়ে। ১৯২৯ সালের মার্চে এলাহাবাদের হিন্দুস্তানি একাডেমিতে প্রদত্ত তার পাঁচটি ঐতিহাসিক বক্তৃতামালার ভিত্তিতে রচিত হয় এই বই। ভারতবর্ষ ও আরব বিশ্বের সম্পর্কের আদি ইতিহাসবিষয়ক এই বইয়ের প্রাসঙ্গিককা আজও অনস্বীকার্য। উর্দু ভাষায় রচিত মূল বই প্রকাশের প্রায় এক শতাব্দী পর তরুণ আলেম, গবেষক ও সাংবাদিক আরিফ খান সাদের হাত ধরে এর বাংলা অনুবাদ বাজারে এলো ‘ভারত-আরব সম্পর্কের আদি ইতিহাস’ নামে।
পাঁচটি অধ্যায়ে সাজানো এই বইয়ে আলোচিত হয়েছে আরব ও ভারতবর্ষের ভৌগোলিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক, প্রাচীন আরব পর্যটকদের ভারতভ্রমণ, দুই দেশের মধ্যে জ্ঞান-বিনিময়ের ইতিহাস, বাগদাদের বাইতুল হিকমায় সংস্কৃত গ্রন্থের আরবি অনুবাদ ও পারস্পরিক ধর্মীয় সেতুবন্ধনের চিত্র। লেখক দলিল ও যুক্তির আলোকে প্রমাণ করে দেখিয়েছেন, ভারতবর্ষে মুসলমানরা কোনো ‘আগত’ জাতি নয়; বরং মানবজাতির প্রথম পিতা আদম (আ.)-এর পদার্পণের মধ্য দিয়েই মুসলমানদের বসতির সূচনা এখানে। তাই ভারতবর্ষ মুসলমানদের ‘মাফতুহি’ বা বিজিত ভূমি নয়, বরং ‘মাউরুসি’ বা পৈতৃক ভূমি।গবেষক আলেম ও সাংবাদিক আরিফ খান সাদ এ বইয়ের শুধু অনুবাদকই নন; তিনি এর মূল পাঠের ত্রুটি ও অসামঞ্জস্য দূর করেছেন, আরবি-ফারসি সূত্র যাচাই করেছেন; যুক্ত করেছেন নতুন শিরোনাম, উপশিরোনাম, টীকা, ব্যাখ্যা এবং বিন্যাস করেছেন নতুন প্যারা ও অনুচ্ছেদ। তার অনুবাদ মূলানুগ, গদ্য সাবলীল; ফলে এটি নিছক ভাষান্তর নয়, পাঠক এখানে পাবেন মৌলিক ও সুখপাঠ্য গবেষণাপাঠের স্বাদ। অনুবাদগ্রন্থটির সম্পাদনা, নিরীক্ষণ ও পর্যালোচনা করেছেন ভারতের নদওয়াতুল উলামা লক্ষ্মৌয়ের গবেষক মাওলানা মামুনুর রশিদ নদভি এবং প্রাজ্ঞ অনুবাদক ও গবেষক মাওলানা আবদুস সাত্তার আইনী।
বাংলা ভাষায় ভারত-আরব ঐতিহাসিক সম্পর্ক নিয়ে প্রামাণ্য গ্রন্থের অভাব ছিল দীর্ঘদিন। সেই শূন্যতা পূরণে ‘ভারত-আরব সম্পর্কের আদি ইতিহাস’ নিঃসন্দেহে এক যুগান্তকারী সংযোজন। এই অনুবাদকর্ম ইতিহাসপ্রেমী, গবেষক, জ্ঞানান্বেষী ও বিদ্যানুরাগী পাঠকদের জ্ঞানতৃষ্ণা নিবারণ করবে।