ঢাকা সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

চুয়াডাঙ্গায় দুই হত্যা মামলায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড

চুয়াডাঙ্গায় দুই হত্যা মামলায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড

চুয়াডাঙ্গায় চাঞ্চল্যকর পৃথক দুটি হত্যা মামলায় তিন আসামির ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ সময় প্রত্যেককে অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়। গতকাল বুধবার আসামিদের উপস্থিতিতে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আকবর আলী শেখ এ রায় ঘোষণা করেন। আলমডাঙ্গা ও জীবননগর উপজেলার এ দুটি হত্যাকাণ্ডই জমিজমা সংক্রান্ত জেরে ঘটেছিল।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, আলমডাঙ্গা উপজেলার হারদী ইউনিয়নের বামানগর গ্রামের কাশেম আলীর ছেলে স্বাধীন আলী। তিনি জেহালা ইউনিয়নের ক্লিনিক পাড়ায় শ্বশুর বাড়িতে বসবাস করেন। একই মামলার অন্য আসামি আশিকুর রহমান আশিক ওরফে বাদশা চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের ফার্ম পাড়ার মৃত বিপ্লব হোসেনের ছেলে। এছাড়া আরেকটি মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জমির উদ্দীন জীবননগর উপজেলার গঙ্গাদাশপুর গ্রামের মৃত ইব্রাহিম মন্ডলের ছেলে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ৯ মে রাতে জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব বিরাধের জেরে একদল দুর্বৃত্ত কামাল হোসেনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে ফেলে রেখে যায়। কামালের স্ত্রী বাড়ির বাইরে বের হলে তাকে রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে কামালকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসাপতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কামাল হোসেনক মৃত ঘোষণা করেন।

সে বছরের ১১ মে নিহতের স্ত্রী সেলিনা আক্তার বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় তদন্ত শেষে আলমডাঙ্গা থানার পরিদর্শক (নিরস্ত্র) ইকরামুল হোসাইন গত ২০২২ সালের ৩১ জুলাই পাঁচজনকে আসামি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এ মামলার ১নং আসামি স্বাধীন আলী ও ৬নং আসামি আশিকুর রহমান বাদশা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারাক্তিমূলক জবাদবন্দি প্রদান করেন। ১৭ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে সন্দেহাতীতভাবে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে তাদের দুজনকেই মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে উভয় আসামিকে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। ওই মামলা থেকে ৫ জনকে খালাস দেওয়া হয়। এদিকে, ২০২২ সালের ১৬ জুন দুপুরে পূর্ব শক্রতার জেরে পূর্বপরিকল্পিতভাব বাবলু রহমানকে কোদাল দিয়ে মাথায় আঘাত হত্যা করা হয়। সেদিনই নিহতের স্ত্রী চায়না খাতুন বাদী হয়ে জীবননগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন জীবননগর থানার উপ-পরিদর্শক সৈকত পাড়ে। এতে একমাত্র অভিযুক্ত ছিলেন জমির উদ্দিন।

১৪ জনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বাবলু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে জমির উদ্দিনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে তাকেও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। চুয়াডাঙ্গা জেলা জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মারুফ সারোয়ার বাবু জানান, এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। চাঞ্চল্যকর দুটি হত্যা মামলায় তিন আসামির ফাঁসির আদেশ সমাজে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত