
কুমিল্লার মুরাদনগরে শতবর্ষী তালগাছ কেটে শতাধিক বাবুই পাখির বাসা ও ছানা হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার সোনাকান্দা গ্রামের মসজিদের পাশে ওয়াকফকৃত একটি তালগাছ কাটার ফলে এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ অনুযায়ী জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে গতকাল রোববার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
সোনাকান্দা গ্রামের মসজিদের পাশে একটি শতবর্ষী তালগাছ ছিল, যা দীর্ঘদিন ধরে বাবুই পাখির নিরাপদ আশ্রয়স্থল ও প্রজনন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। গত শনিবার বিকালে সোনাকান্দা গ্রামের আবুবকর মোহাম্মদ শামসুল হুদার ছেলে মাহমুদুর রহমান মীর হোসেন ও জাকির হোসেনের সহায়তায় গাছটি কেটে ফেলেন। গাছ কাটার সময় অসংখ্য বাবুই পাখির বাসা মাটিতে পড়ে যায়, যার ফলে ডিম ভেঙে যায় এবং অসংখ্য ছানা মারা পড়ে।
অভিযুক্ত মাহমুদুর রহমান গাছ কাটার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, মসজিদ সম্প্রসারণের জন্য গাছটি কাটা প্রয়োজন ছিল। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, ওয়াকফকৃত জায়গা থেকে গাছ কাটতে হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগে, যা নেওয়া হয়নি। এছাড়া, বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ অনুযায়ী বাবুই পাখির ছানা হত্যা ও ডিম ধ্বংস করা একটি গুরুতর অপরাধ।
বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মাহফুজুর রহমান জানিয়েছেন, বিষয়টি তার জানা নেই এবং তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।
কোম্পানীগঞ্জ সামাজিক বন বিভাগের কর্মকর্তা আবদুল মতিন বলেছেন, ওয়াকফকৃত জায়গা থেকে গাছ কাটার কোনো সুযোগ নেই। অভিযোগ প্রমাণিত হলে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুর রহমান বলেছেন, ওয়াকফকৃত জায়গার গাছ কাটতে ওয়াকফ স্টেট কর্তৃপক্ষের অনুমতি প্রয়োজন। বাবুই পাখির ছানা হত্যা ও ডিম ধ্বংসের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
এই ঘটনায় পরিবেশবিদ ও প্রাণিপ্রেমীরা দ্রুত তদন্ত এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।